মুম্বই: যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়া ছাত্রী পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারবে না বা স্বাভাবিক আচরণ করবে না, এ রকম ধরে নেওয়া উচিত নয়। যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাজা ঘোষণার সময় এ কথা জানিয়েছে আদালত। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিজের নাবালিকা মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়ায় মামলায় সাজা ঘোষণা করা হয়। মুম্বইয়ের পকসো আদালতের বিশেষ বিচারক মেয়েকে ধর্ষণে দোষী বাবাকে ১০ বছরের জেলের সাজা শুনিয়েছে আদালত। সে সময়ই এই মন্তব্য করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মেয়েকে ধর্ষণে দোষী ব্যক্তি সৌদি আরবের একটি জাহাজে কর্মরত। ২ মাস অন্তর মুম্বইয়ে পরিবাররে সঙ্গে দেখা করতে আসত সে। ২০১৪ সালে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন, ওই ব্যক্তি বাড়িতে এলেই তাঁর মেয়ে বাবাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। কিছুতেই বাবার কাছে যাচ্ছে না। তখনই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই মা জানতে পারেন, কয়েক বছর ধরেই বাবার হাতে ধর্ষণের শিকার মেয়ে। মেয়ের বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই বাবার অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। ঘটনা জানতে পেরে ওই নাবালিকার মা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই নাবালিকা জানায় নবম শ্রেণিতেও ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েও রোজ স্কুলে গিয়েছে। অত্যাচারী বাবা বাড়িতে থাকলেও স্কুলে গিয়েছে সে। বাবা তাঁদের জন্য নতুন খেলনা, জামা কাপড়ও আনত বলে সে জানিয়েছে।
এই বক্তব্য ধরেই অভিযুক্তের আইনজীবী অত্যাচারিতার মানসিক বিপর্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলে ছাত্রী অত্যাচারিতা হলে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন। এই বক্তব্যের প্রক্ষিতেই বিচারক বলেন, “সব যৌন হেনস্থাকে এক চোখে দেখা ঠিক নয়। সব যৌন হেনস্থার প্রতিক্রিয়াও এক রকম হয় না।” এর পরই তিনি বলেন, “কেউ এক জন যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে তিনি ভাল ফল করতে পারবেন না, এ রকম ভাবা উচিত নয়।”