নয়া দিল্লি: শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলায় বড় অগ্রগতি। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক প্রতিবেদনে দিল্লি পুলিশের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, দক্ষিণ দিল্লির মেহরাউলির জঙ্গল এবং গুরুগ্রাম থেকে যে হাড় এবং শুকিয়ে যাওয়া রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছিল দিল্লি পুলিশ, তার সঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকারের বাবা বিকাশ ওয়াকারের ডিএনএ-র মিল পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ, দেহাংশগুলি যে শ্রদ্ধার, এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেল। শ্রদ্ধা এবং আফতাবের ভাড়া নেওযা ফ্ল্যাটটির বাথরুমের টাইলস থেকে যে শুকনো রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, সেগুলিরও ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি। উল্লেখ্য, এদিনই আফতাবের পলিগ্রাফ পরীক্ষার বিশদ রিপোর্টও দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট অবশ্য এখনও হাতে পায়নি পুলিশ।
গত ১৮ মে শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল আফতাব পুনাওয়ালা, এমনই অভিযোগ। এরপর সেই দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে একটি ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল সে। তারপর, বেশ কয়েকদিন ধরে দক্ষিণ দিল্লির মেহরাউলির জঙ্গলে দেহাংশগুলি ফেলে দিয়েছিল সে। গুরুগ্রামে তার অফিসের কাছাকাছি এলাকাতেও শ্রদ্ধার কিছু দেহাংশ ফেলেছিল আফতাব, এমনও সন্দেহ দিল্লি পুলিশের।
গত ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। পুলিশি জেরার মুখে নিজেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর দিয়েছিল আফতাব। এরপরই মেহরাউলির জঙ্গল তন্ন তন্ন করে শ্রদ্ধার দেহাংশের সন্ধান চালিয়েছিল পুলিশ। মাদাঙ্গির এলাকার একটি পুকুরের জল সরিয়ে তার তলাতেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। মেহরাউলির জঙ্গল থেকে ১৩টি হাড়ের টুকরো উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তারমধ্যে একটি চোয়ালের হাড়ও ছিল। এছাড়া, গুরুগ্রামের ডিএলএফ ফেজ় ২-তে, আফতাবের অফিসের কাছাকাছি এলাকাতেও তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
বেশ কয়েক ধাপে আফতাবের পলিগ্রাফ পরীক্ষা এবং নার্কো পরীক্ষাও করিয়েছে দিল্লি পুলিশ। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির কর্তারা জানিয়েছিলেন, পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময়ও শ্রদ্ধাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে আফতাব। এই জঘন্য অপরাধ করার জন্য সামান্যতম অনুতাপও তার মধ্যে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা।