নয়া দিল্লি: প্রথম চাকরি পাওয়ার পর এবং আফতাব আমিন পুনাওয়ালার সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরই তাঁর মেয়ে বদলে গিয়েছিল। এমনই দাবি করলেন দিল্লিতে নৃশংস হত্যার শিকার শ্রদ্ধা ওয়েলকারের বাবা বিকাশ মদন ওয়েলকার। তাঁর দাবি, মেয়েকে আফতাবের সঙ্গে সম্পর্কে না যাওয়ার বিষয়ে বুঝিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, মেয়ে কথা শোনেনি। বরং বলেছিল, মনে কর তোমাদের কোনও মেয়ে ছিল না।
TV9-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বিকাশ মদন ওয়েলকার বলেছেন, “শ্রদ্ধা খুব ভাল মেয়ে ছিল। ফ্যাশন ট্যাশন কিছু করত না। একদম সাধারণভাবে থাকত। যখন থেকে ও প্রথম চাকরি করা শুরু করেছিল এবং ওর সঙ্গে এই ছেলেটির দেখা হয়েছিল, তখন থেকেই লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এসেছিল শ্রদ্ধার।”
বিকাশ মদন ওয়েলকার যে এফআইআর-এ জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে মুম্বইয়ের মালাদে একটি কল সেন্টারে কাজ পেয়েছিলেন শ্রদ্ধা। সেই অফিসে তাঁর সহকর্মী ছিলেন আফতাব। আট-নয় মাস পর শ্রদ্ধার বাবা-মা জানতে পারেন তাঁর সঙ্গে আফতাবের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ২০১৯ সালে, শ্রদ্ধা বাড়িতে জানান তিনি আফতাবের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান। সেই সময়ই এই সম্পর্কে না যাওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা।
যদিও শ্রদ্ধা তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। বাবা-মা আফতাবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিষয়ে অসম্মতি জানানোর পর, ঘোষণা করার পরে, শ্রদ্ধা বলেছিলেন, “আমার বয়স ২৫। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আমার। আমি আফতাবের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক থাকতে চাই। আজ থেকে তোমরা ভাবতে পারো যে, তোমাদের কোনও মেয়ে ছিল না।” এরপর তিনি তাঁর জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, আফতাব আমিন পুনাওয়ালা ‘সাইকোপ্যাথ’ বলেই জানাচ্ছেন মনস্তত্ত্ববিদরা। মনস্তত্ত্ববিদ ওম প্রকাশ সিং TV9-কে বলেছেন, “একে আমরা বলি সাইকোপ্যাথিক পার্সোনালিটি। এরা নিজেদের ছাড়া আর কারোর কথা ভাবে না। সব সম্পর্কই তারা গড়ে নিজেকে খুশি করার জন্য। বাকিরা তাদের কাছে অবজেক্ট বা বস্তু। তাদের মানুষ বলেই মনে করে না। মনস্তত্ত্ববিদ প্রদীপ সাহা বলেছেন, “যারা পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা অত্যন্ত সুন্দর কথা বলতে পারে। যে কোনও মানুষের সঙ্গে খুব সহজেই বন্ধুত্ব করতে পারে, মিশে যেতে পারে। এরা সবসময় আত্মকেন্দ্রিক।”