নয়া দিল্লি: মে মাসে নয়, আগেই শ্রদ্ধাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন শ্রদ্ধা, সেই কারণেই পরিকল্পনা পিছিয়ে দেন। দিল্লিতে লিভ ইন সম্পর্কে থাকা শ্রদ্ধা ওয়াকার খুন ও তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করার ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। শনিবারই দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে আফতাবকে। তাঁকে জেরা করেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে।
চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকেই আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে জেরা করছে দিল্লি পুলিশ। জেরায় আফতাব মুখও খুলেছে, কীভাবে গত ১৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করেছিল সে এবং তারপরে দেহ ৩৫টি টুকরো করেছিল, তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে। এবার আফতাব জানাল, ১৮ মে নয়, তার ১০ দিন আগেই শ্রদ্ধাকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শ্রদ্ধা, সেই কারণে খুনের পরিকল্পনা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় সে।
আফতাব জানিয়েছেন, ৮ মে তুমুল ঝগড়া হয়েছিল তাঁর সঙ্গে শ্রদ্ধার। সেই সময়ই গলা টিপে খুন করতে ইচ্ছা করেছিল তাঁর। কিন্তু ঝগড়ার মাঝেই হঠাৎ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শ্রদ্ধা, হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। শ্রদ্ধার কান্না দেখে কিছুটা মন গলে আফতাবের, খুনের পরিকল্পনা সেই সময়ের জন্য বাতিল করে দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইন ডেটিং অ্যাপ বাম্বলে পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা ও আফতাবের। তিন বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা। সম্প্রতিই তাদের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। শ্রদ্ধার সন্দেহ ছিল, আফতাব অন্য কারোর সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল তাঁর সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা বলতও সে। যার প্রেমে পড়ে পরিবার ছেড়ে এসেছিলেন, তাঁর হঠাৎ মন বদলেই অত্যন্ত মুষড়ে পড়েছিলেন শ্রদ্ধা। প্রায়সময়ই আফতাবের সঙ্গে ঝগড়া, চিৎকার-চেঁচামেচি করতেন।
গত ১৮ মে ফের বচসা হয় আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে। ঝগড়ার সময় আফতাব শ্রদ্ধার বুকের উপরে বসে পড়ে এবং গলা টিপে ধরে। খুনের পরেরদিন, মাংস কাটার ছুরি দিয়ে শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে, সেই অংশগুলি নতুন ৩০০ লিটারের ফ্রিজে জমিয়ে রাখে। দেহের বাকি অংশের থেকে মাথা আলাদা রাখে প্ল্যাস্টিকে মুড়িয়ে। প্রত্যেকদিন ফ্রিজ খুলে শ্রদ্ধার কাটা মুণ্ডু দেখত সে, এমনটাও জানা গিয়েছে তদন্তে।
গতকালই পুলিশ আফতাবকে দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলিতে নিয়ে যায়, সেখানের জঙ্গলে কোথায় কোথায় শ্রদ্ধার দেহ ফেলেছিল, তা দেখায় আফতাব। তিন ঘণ্টা ধরে খুঁজে দেহের ১৩টি টুকরো উদ্ধার করা হয়। এখনও অবধি দেহাংশে ভর্তি মোট ১০টি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। সবকটি দেহাংশের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।