নয়া দিল্লি: শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। শ্রদ্ধাকে খুন করে দেহাংশ ৩৫ টুকরো করার পর জল দিয়েই রক্ত ধুয়েছিল আফতাব। আফতাব যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়িতে মে মাসে আসা জলের বিল থেকে এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের। আফতাব যে বাড়িতে থাকতেন, সেই বাড়িতে মে মাসে অত্যধিক জলের বিল এসেছিল। যা বিস্ময়কর।
জানা গিয়েছে, দিল্লির মেহরৌলিতে যে বাড়িতে আফতাব থাকতেন, সেই বাড়িতে গত মে মাসে জলের বিল এসেছিল ৩০০ টাকা। যদিও সাধারণভাবে ৩০০ টাকা বিল খুব বেশি মনে হয় না। কিন্তু যেখানে মাসে ২০ হাজার লিটার জল অর্থাৎ গড়ে ৩৫ বালতি জল ফ্রি থাকে, অধিকাংশ বাড়িতে জলের ‘জিরো’ বিল আসে, সেখানে কোনও বিশেষ অনুষ্ঠান বা অতিথির আগমন ছাড়া ৩০০ টাকার জলের বিল স্বাভাবিকভাবেই অত্যধিক। ওই বাড়ির মালিক রোহন কুমারের বাবা রাজেন্দ্র কুমারের কথায়, “এত টাকা জলের বিল সত্যিই বিস্ময়কর।” সেই জলের বিলের টাকা আফতাব এখনও পর্যন্ত মেটাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
আশ্চর্যজনকভাবে অত্যধিক জলের বিল বাড়ির মালিকের কপালে ভাঁজ ফেললেও এবং আফতাব সেই বিলের টাকা না দেওয়ার পরেও অবশ্য তাঁকে ফ্ল্যাট ছাড়তে বলেননি রোহন কুমার। এর অন্যতম কারণ অবশ্যই মোটা টাকা ফ্ল্যাটের ভাড়া এবং সেটা নির্দিষ্ট সময়ে দিতেন আফতাব। রাজেন্দ্র কুমার বলেন, “প্রতি মাসে ফ্ল্যাটটির ভাড়া ছিল ৯ হাজার টাকা। প্রতি মাসের ৮ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে অনলাইনে আফতাব সেই ভাড়া অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিতেন। সেজন্য আমি কখনও চাইনি, সে ফ্ল্যাট থেকে চলে যাক।”
জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের ভারসাই থেকে আসার পর আফতাব ও শ্রদ্ধা দিল্লির মেহরৌলিতে তিনতলা ওই বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। ফ্ল্যাটটির চুক্তিপত্রে আফতাব ও শ্রদ্ধা, দুজনের নামই ছিল। প্রথমে শ্রদ্ধা ও পরে আফতাবের নাম ছিল। শ্রদ্ধার নিখোঁজ হওয়া এবং অত্যধিক টাকার জলের বিল নিয়ে বাড়ির মালিকের সঙ্গে আফতাবের বচসাও হয়েছিল। তারপরেও জলের বিলের টাকা মেটাননি আফতাব।
তদন্তকারীদের দাবি, শ্রদ্ধার দেহ টুকরো-টুকরো করার পর গোটা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল রক্ত। সেই রক্তের দাগ মুছতে আফতাব প্রথমে গুগলের সাহায্য নিলেও শেষ পর্যন্ত জল দিয়েই রক্ত ধুয়েছেন। আফতাব বারবার ট্যাঙ্কিতে জলের স্তর দেখতেন বলেও ওই বাড়ির আবাসিকদের অভিযোগ। গোটা বিষয় খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।