সিকিম: খারাপ আবহাওয়ার কথা আগেই জানতেন পর্যটকরা। কিন্তু বরফ দেখার শখ পূরণ করতেই ছাঙ্গু গিয়েছিলেন সকলে। আর সেখানে যেতেই ঘটল বিপত্তি। সিকিমের ছাঙ্গু রোডে ১৭ মাইলে মঙ্গলবার হঠাৎ তুষারধস নামে। পাহাড়ের কোল থেকে হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে বরফের স্রোত। সেই সময় পাহাড়ের ঢালে দাঁড়িয়ে যে সমস্ত পর্যটকরা আনন্দে মেতে উঠেছিলেন, তারা নিমেষে ভেসে যান। বরফের স্তূপের নীচেও চাপা পড়ে যান বহু পর্যটক। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করে সেনাবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সিকিমের তুষারধসে এখনও অবধি ৭ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৩ জন। দিনভর উদ্ধারকাজ চালানোর পর রাতে এনডিআরএফের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, আর কোনও পর্যটক বরফের নীচে চাপা পড়ে নেই বলেই জানা গিয়েছে। সেই কারণে উদ্ধারকাজ বন্ধ করা হচ্ছে।
ঘুরতে গিয়ে চরম বিপদের মুখে পড়েছেন পর্যটকরা। মঙ্গলবার সিকিমের ছাঙ্গু রোডে ১৭ মাইলে তুষারধসের কারণে কমপক্ষে ৮০টি গাড়ি আটকে পড়ে। ৩৫০ জন পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। বরফের নীচে চাপা পড়ে এক শিশু সহ সাত জন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। আহত ১৩ জনের মধ্যেও ৭ জন বাঙালি।
In a tragic incident, at least 6 tourists died after massive avalanche hit road connecting Sikkim ‘s capital Gangtok with Nathulapass on China border.
350 stranded tourists & 80 vehicles were rescued after snow clearance from the road. Evacuation ongoingpic.twitter.com/S6HOXUAVkI
— Megh Updates ?™ (@MeghUpdates) April 4, 2023
তুষারধসের জেরে শুধু পর্যটকরাই নন, বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। যে অঞ্চলে ধস নেমেছে, তার আশেপাশের বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১৫০ জন স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তুষারধসের একাধিক ভিডিয়োও সামনে এসেছে, যেখানে দেখা গিয়েছে হুড়মুড়িয়ে বরফ নেমে আসছে। পর্যটকরা সেই বরফের নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছেন।
যে সমস্ত পর্যটকদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁরা জানিয়েছেন যে বরফের নীচে চাপা পড়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন। হাত-পা নাড়ানোর সুযোগটুকু পাচ্ছিলেন না। পরে অন্যান্য পর্যটক, সেনাবাহিনী ও এনডিআরএফের সাহায্যে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
Scarry video of #Sikkim when #Avalanche hit tourists leading to death of 07 persons, 20 rescued but few still trapped. pic.twitter.com/DXGA1LAX3T
— Neeraj Rajput (@neeraj_rajput) April 4, 2023
মঙ্গলবার তুষারধস নামার পরই সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বরফের স্তূপের ভিতর থেকে পর্যটকদের টেনে বের করা হয়। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে বাধা পান উদ্ধারকারী দল। ইতিমধ্যেই সিকিম সরকারের তরফে মৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মৃতদের মধ্য়ে তিনজন নেপালের বাসিন্দা রয়েছেন, তাদের নাম মুনা শাহ শ্রেষ্ট্রা, শিব লামিচান(২২), আশিকা ঢাকাল (২২)। এছাড়া উত্তর প্রদেশের দুইজন বাসিন্দারও মৃত্যু হয়েছে, তাদের নাম বাল সিংহ (৩২) এবং রেবিয়া সিংহ (৬)। রাজ্যের যে দুইজন বাসিন্দা রয়েছেন, তাঁরা হলেন সৌরভ রায়চৌধুরী (২৮) এবং প্রীতম মাটি (৩৮)। এনডিআরএফের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত পর্যটক ও গাড়িকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ আপাতত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।