নয়া দিল্লি: গতকালই ভয়াবহ এক দৃশ্য দেখা গিয়েছে সিংঘু সীমানায় (Singhu Border)। কৃষক আন্দোলনের (Farmer’s Protest) মঞ্চের একেবারে কাছেই পাওয়া কি গিয়েছে এক ক্ষতবিক্ষত দেহ। ব্যারিকেডে ঝোলানো ছিল রক্তে ভেজা সেই দেহ। ইতিমধ্যেই ওই খুনের দায় স্বীকার করেছে শিখ নিহঙ্গ (Sikh Nihanga) গোষ্ঠী। এরইমধ্যে এই ঘটনার জেরে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হলেন আইনজীবী শশাঙ্ক শেখর ঝা। তাঁর দাবি কৃষক আন্দোলনের মঞ্চ সরিয়ে দিয়ে অবিলম্বে ফাঁকা করতে হবে সিংঘু সীমানা। সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ভোরে কৃষক আন্দোলনের মঞ্চের কাছে ওই মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু ভিডিয়োও প্রকাশ্যে আসে। এ দিনই শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী শশাঙ্ক শেখর ঝা। তাঁর দাবি, দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে সিংঘুতে যে কৃষক আন্দোলন চলছে তা বেআইনি। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে অবৈধভাবে আন্দোলন চালানো হচ্ছে, তাই অবিলম্বে সেই আন্দোলনের মঞ্চ সরিয়ে দিতে হবে।
আইনজীবী আবেদনের মনে করিয়ে দিয়েছেন, কিছুদিন আগেই এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ওই আন্দোলন মঞ্চের কাছেই, এবার এক দলিত যুবককে খুন করা হল। পাশাপাশি গত ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে কৃষকদের যে ট্রাক্টর মিছিল হয়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে।
তবে এই ঘটনার সঙ্গে কৃষক আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। তাঁরা সাফ জানিয়েছেন মৃত যুবক এবং হত্যাকারী নিহঙ্গ গোষ্ঠী, কারও সঙ্গেই কৃষকদের কোনও সম্পর্ক নেই। কৃষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছেন, যে কোনও ধরনের হিংসার বিরোধিতা করবেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে নিহত যুবকের নাম লখবীর সিং। ৩৫ বছর বয়স। পঞ্জাবের তরণ তারণ জেলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। দলিত লখবীর একজন শ্রমিক। তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়ে আছে। নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় ওই যুবককে। খুনের পর মৃতের হাত কেটে ব্যারিকেডে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, দেহটি ১০০ মিটার পর্যন্ত টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। মৃতদেহে ধারাল অস্ত্রের কোপও রয়েছে।
ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শুক্রবার একজনকে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। শুক্রবার সরবজিত সিং নামে ওই যুবক পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন তিনি। লখবীরের দেহ আপাতত উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। একাধিক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, লখবীর নামে ওই ব্যক্তি নাকি পবিত্র শিখ ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থসাহিবের অবমাননা করেছিলেন। আর সেই কারণেই তাঁর উপর চড়াও হয় নিহঙ্গ গোষ্ঠী।
আরও পড়ুন : Navjot Singh Sidhu: দশেরার সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধীর বাড়িতে বৈঠক, বেরিয়েই ইস্তফার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার সিধুর