ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে দেশের করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতি। ফের একদিনে সংক্রমণের পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ভারতের একাধিক রাজ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। শুক্রবার গোটা দেশে ৮৯,১২৯ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের পর যা সর্বাধিক। একইসঙ্গে দেশে পজিটিভ কেস বেড়ে ১,২৩,৯১,১৪০ হয়েছে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরল, ছত্তিসগঢ়, গুজরাতের অবস্থা শোচনীয়। মুম্বইতেই গত ২৪ ঘণ্টায় নয় হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ওড়িশাতেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০ জেলায় নৈশ কার্ফু জারি করা হয়েছে। পাল্লা দিয়ে খারাপ হচ্ছে বাংলার অবস্থাও। শুক্রবারই এ রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৭৩৩ জন। মৃত্যু হয়েছে চারজনের।
তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনের আগেই করোনা আক্রান্ত হলেন ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি। এ দিকে, প্রবীণ কাশ্মীরী নেতা ফারুক আবদুল্লাকেও করোনার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল।
উত্তর প্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা এক মহিলাকে ভুল করে একসঙ্গেই করোনার দুটি ডোজ় দিয়ে দিলেন এক নার্স। জানা গিয়েছে, ওই সময় নার্স ফোনে কথা বলছিলেন। সেই সময়ই তিনি ভুল করে দুটি ডোজ় দিয়ে দেন।
বিস্তারিত পড়ুন: ফোনে কথা বলতেই ব্যস্ত নার্স, ‘ভুলবশত’ দিয়ে দিলেন দুটি ডোজ়!
মুম্বইতে একদিনেই করোনা আক্রান্ত হলেন নয় হাজারেরও বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। এটিই মুম্বইয়ে সর্বোচ্চ সংক্রমণের সংখ্যা।
রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই ৫ এপ্রিল থেকে ১০ জেলায় নৈশ কার্ফু জারি করল ওড়িশা সরকার। সেপেশাল রিলিফ কমিশনার পিকে জেনা জানান, অনির্দিষ্টকালের জন্য সুন্দুরগঢ়, ঝাড়সুরদা, সম্বলপুর, বারগঢ়, বালাঙ্গীর, কালাহাণ্ডি,নবরংপুর, কোরাপুট ও মলকানগিরিতে নৈশ কার্ফু জারি করা হচ্ছে। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা অবধি এই জেলাগুলিতে সমস্ত দোকানপাট, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় ওড়িশায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫২ জন। এদের মঝধ্যে ৫০ শতাংশই ওই ১০ জেলার বাসিন্দা।
রাজধানীতে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৬৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। বর্তমানে রাজ্যে আক্রান্তের হার ৪.৪৮ শতাংশ।
করোনা টিকা নিলেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। তিনি নিজেই টুইট করে জানান এই কথা। একইসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানান, সকলের জন্যই যেন করোনা টিকা উপলব্ধ করা হয়।
Got vaccinated with my family today @HospitalLok!
Thankful to our brilliant scientists, medical teams & everyone who worked tirelessly for making vaccines for us.
Center Govt should provide vaccine for all without age restrictions. Let’s fight #Covid together! pic.twitter.com/0xPLaXHY64
— Manish Sisodia (@msisodia) April 3, 2021
কলেজ সফর থেকে ফেরার পরই ১৩ জন পড়ুয়া সহ দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজের মোট ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। ইতিমধ্যেই কলেজ ক্যাম্পাসে কড়া স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩১ মার্চই কলেজ সফরে ডালহৌসি থেকে দিল্লিতে ফেরে ওই পড়ুয়ার দল। এরপরই একে একে পড়ুয়াদের দেহে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। ক্যাম্পাসে করোনা পরীক্ষা করতেই ১৭ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে করোনায় মৃতদের দেহ সৎকারই দায় হয়ে উঠেছে। ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ জেলায় প্রতিদিন নতুন করে তিন-চার জনের মৃত্যু হওয়ায় কার্যত মৃতদেহের পাহাড় জমেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহ সংরক্ষণের জন্য মর্গে মোট আটটি ফ্রিজার থাকলেও বর্তমানে মৃতদেহের সংখ্যা ২৭। পরিবারের হাতে মৃতদেহগুলি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও জবাব মিলছে না।
বাড়তি করোনা আক্রান্তর সংখ্যায় লাগাম টানতে ৭ দিনের লকডাউনের পথে হাঁটছে হাসিনা সরকার। গোটা বাংলাদেশে (Bangladesh) করোনার করাল থাবা রুখতে ৭ দিনের জাতীয় লকডাউনের কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিস্তারিত পড়ুন: রোখা যাচ্ছে না সংক্রমণ, জাতীয় লকডাউনের পথে বাংলাদেশ
নির্বাচনের মুখেই করোনা আক্রান্ত হলেন ডিএমকে নেত্রী তথা সাংসদ কানিমোঝি। চিকিৎসার জন্য তিনি চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আপাতত তিনি হোম আইসোলেশনে রয়েছেন বলেই জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। এ দিন তাঁকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হল। তাঁর পুত্র তথা দলীয় নেতা ওমার আবদুল্লা টুইট করে জানান, বাবার শারীরিক অবস্থার দিকে আরও ভাল করে নজরদারি চালাতে চিকিৎসকদের পরামর্শে শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। একইসঙ্গে যাঁরা ফারুক আবদুল্লার সুস্থতা কামনা করেছেন, তাঁদের সকলকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
ভোট (West Bengal Assembly Election 2021) নিয়ে যখন বঙ্গবাসী ব্যস্ত, তখন সমান্তরালভাবে বহরে বেড়ে চলেছে বাংলার করোনা পরিস্থিতি। একদিনে ১২৭৪ থেকে বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা হল ১৭৩৩। কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ থেকে বেড়ে ৫১৩। এভাবে এগোতে থাকলে ২০২০ সালের রেকর্ডকেও তুড়ি মেরে ভেঙে দেবে ভোটের বাংলায় করোনার রেখচিত্র।
বিস্তারিত পড়ুন: রাজ্যে একদিনে ১ হাজার ৭৩৩ জন আক্রান্ত, ভোটের বাংলা কী ভাবে সামলাবে করোনা!