লখনউ: আবারও যোগী রাজ্যে পুলিশি বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ! পুলিশি অভিযানের পর ব্যবসায়ীর মৃত্যু ঘিরে ৬ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) খাস তালুক হিসেবে পরিচিত গোরক্ষপুরে (Gorakhpur) ঘটেছে। সোমবার শহরের একটি হোটেলে মাঝরাতে হানা দেয় পুলিশের একটি দল। তল্লাশি চালাবার সময়ই ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয় বলে খবর। মৃত ব্যবসায়ীর নাম মণীশ কুমার গুপ্তা। তিনি কানপুরের (Kanpur) বাসিন্দা। মৃত্যুর কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে।
গোরক্ষপুর পুলিশের তরফ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রীয়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ৬ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কোন কোন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে গোরক্ষপুর পুলিশের টুইটে তার উল্লেখ নেই। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav) শোক প্রকাশ করে টুইট করেছে। এর পাশাপাশি রাজ্যের পুলিশকে একহাত নিয়েছেন অখিলেশ। তিনি লিখেছেন ” পুলিশ নৃশংসভাবে ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে। এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখের ও নিন্দনীয়। এই ঘটনা রাজ্যের বিজেপি সরকারের তৈরি করা এনকাউন্টার সংস্কৃতির অঙ্গ। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর শাস্তি চাই এবং এই সংস্কৃতি যারা আমদানি করেছে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। ”
মৃত ব্যক্তির স্ত্রীয়ের বয়ান থেকে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন নিজের দুই বন্ধুর সঙ্গে হোটেলে ছিলেন মৃত ব্যবসায়ী। সেই সময় হোটেলে তল্লাশিতে আসে পুলিশ। তল্লাশির সময় মৃত ব্যবসায়ী পুলিশের সঙ্গে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ এর পর বেধড়ক মারধর করা হয় ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর বন্ধুদের । সেই সময়েই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান ওই ব্যবসায়ী। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মারধরের কারণেই এই মৃত্যু বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীর স্ত্রী।
মৃত ব্যবসায়ী দুই সহযোগীর একজন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ” আমরা তিনজন আমাদের ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। রাত ১২.৩০ টা নাগাদ বেল বাজে। আমি দরজা খুলতেই ৫-৭ জন পুলিশ কর্মী ঘরে ঢুকে পড়েন। তারা আমাদের পরিচয়পত্র দেখতে চান। আমি পরিচয়পত্র দেখিয়ে মণীশকে ঘুম থেকে তুলে দিই। এর পরেই ঘটনার সূত্রপাত। তাঁরা প্রত্যেকেই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।” গোরক্ষপুর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলেও চাপের মুখে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের সাসপেন্ড করতে বাধ্য হয় তারা। এখন আগামী দিনে এই ঘটনা জল কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের।