নয়া দিল্লি: পাঁচ রাজ্যে চলছে বিধানসভা নির্বাচন। আগামী ১০ মার্চ এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল (Assembly Election Results) প্রকাশ হবে। তারপরই বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের গদি থেকে কীভাবে বিজেপিকে সরানো যায়, তা ঠিক করতেই বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কংগ্রেস নেত্রী। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে আমন্ত্রণ পেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)-ও। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ইতিমধ্য়েই প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়ে গিয়েছে এবং সমস্ত বিরোধী দলগুলিকেই আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার সিপিআই(এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “আমরা আগেও দুবার বৈঠক করেছি। দুটি বৈঠকেই সমস্ত বিরোধী দলগুলিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। এইবারও সকলকেই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। বর্তমানে অধিকাংশ দলই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। তাই নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলে তারপরই বৈঠক করা হবে।”
উল্লেখ্য, এর আগে শেষবার বিরোধী দলগুলির বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ২০ অগস্ট। সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিল ১৯টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেই সময়ই গান্ধী পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল যে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি ব্যক্তিগত বিরোধ সরিয়ে রেখে যেন জাতীয় স্বার্থে একজোট হয় এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য সুুপরিকল্পিতভাবে এগোয়। সমস্ত বিরোধী দলগুলিরই লক্ষ্য যেন একটাই হয় যে ভারতকে এমন একটি সরকার দেওয়া, যা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সংবিধানের নীতির উপরে বিশ্বাসী।
কংগ্রেসের বিরোধী জোটের মধ্যে বিরোধ না থাকলেও, একমাত্র তৃণমূলের সঙ্গেই গত বছর থেকে দূরত্ব বেড়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী পরামর্শদাতা তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় বিরোধ বাড়ে। এরপর অন্যান্য রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেও তৃণমূল অংশ নেবে, এই ঘোষণার পরই কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলিইরো থেকে শুরু করে সুস্মিতা দেব, মুকুল সাংমার মতো নেতাদের ভাঙিয়ে নিজেদের দলে টেনে নেয় তৃণমূল। এরপরই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। শীতকালীন অধিবেশনেও ডিএমকে, এনসিপি, সিপিআইএম ও শিবসেনার সঙ্গে বৈঠক করলেও, সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ঘাসফুল শিবিরকে।
সম্প্রতিই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এমকে স্ট্যালিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর শিবসেনার নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মুখ্য়মন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকের প্রস্তাবও দিয়েছেন। একদিকে যেখানে তৃণমূল জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছে, সেখানেই কংগ্রেস বিরোধী ফ্রন্টের নেতৃত্ব নিজের হাতেই রাখতে চায়। এক্ষেত্রে যদি পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড ও উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে জয়লাভ করে, তবে নিজেদের পুরনো অবস্থান ফিরে পাবে কংগ্রেস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, কংগ্রেসের তরফে তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। তবে তৃণমূল যদি সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়, তবে তারা যে আর বিরোধী জোটে আগ্রহী নয়, তা বোঝা যাবে। আমাদের তরফে সকলকে একত্রিত করার চেষ্টাই করা হবে।
আরও পড়ুন: Hijab Row: ভোট দিতে গেলেও খুলতে হবে হিজাব! বিজেপি বুথকর্মীর দাবি ঘিরে বিতর্ক