বেঙ্গালুরু: কারও অণ্ডকোষ চেপে ধরলে ‘গুরুতর আঘাত’ লাগতে পারে। তবে একে ‘হত্যার চেষ্টা’ বলা যাবে না। পর্যবেক্ষণ কর্নাটক হাইকোর্টের। ঝগড়ার সময় একজনের অণ্ডকোষ চেপে ধরার জন্য হত্যার চেষ্টার অভিযোগে সাজ পেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি হাইকোর্টে সেই সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন। সেই মামলার রায় দানের সময়ই বিচারপতি কে নটরাজন এই পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন অণ্ডকোষ শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এমনকি, অণ্ডকোষের আঘাতের চিকিত্সা না করা হলে, তা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে যে, আবেদনকারী ওই ব্যক্তিকে হত্যা ইচ্ছায় তাঁর অন্ডকোষ চেপে ধরেননি। এমনটাই জানিয়েছেন বিচারপতি নটরাজন।
বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, আবেদনকারী এবং আহত ব্যক্তির মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। কিন্তু, তাঁদের যখন ঝগড়া বেঁধেছিল, সেই সময় আবেদনকারীর সঙ্গে কোনও প্রাণঘাতী অস্ত্র ছিল না। কাজেই, ওই আহত ব্যক্তিকে হত্যার কোনও উদ্দেশ্য আবেদনকারীর ছিল না বলেই মনে করেছে আদালত। বিচারপতি নটরাজন বলেন, “এটা বলা যাবে না যে অভিযুক্ত খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল বা খুনের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। যদি আদৌ সে খুনের প্রস্তুতি বা চেষ্টা করত, তাহলে সে খুনের জন্য তার সঙ্গে কোনও প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে আসতে পারত।” আদালত বলেছে। তাই নিম্ন আদালতের হত্যার চেষ্টার সাজা খারিজ করে দিয়ে, কর্নাটক হাইকোর্ট আবেদনকারীকে ‘স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত’ করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছে। ফলে, আবেদনকারীর ৭ বছরের কারাদণ্ডের সাজা কমে, ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। এর সঙ্গে তাঁকে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। জরিমানার টাকাটি ক্ষতুপূরণ হিসেবে পাবেন আহত ব্যক্তি।
এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল ২০১০ সালে। ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে আগে থেকেই ঝামেলা ছিল। এক উৎসবের মিছিলে বেশ কয়েকজনের সামনে তাদের ঝগড়া বেঁধেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা আদালতে সাক্ষও দিয়েছেন। ঝগড়া চলাকালীন, উচ্চ আদালতে আবেদনকারী অপর ব্যক্তিকে গালাগালি করেন এবং আচমকা তাঁর অন্ডকোষ চেপে ধরেছিলেন। তিনি এত বল প্রয়োগ করেছিলেন যে, অপর ব্যক্তির অণ্ডকোষে অভ্যন্তরীণ আঘাত লেগেছিল। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং তাঁর বাম অণ্ডকোষ অপসারণ করতে হয়। নিম্ন আদালতে, অভিযুক্তকে হত্যার চেষ্টার পাশাপাশি, অন্যায়ভাবে দমন করা এবং শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করার অভিযোগেও দোষী সাব্যস্ত করেছিল। উচ্চ আদালত হত্যার চেষ্টার অভিযোগটি খারিজ করে দিলেও, বাকি দুই ধারার ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে।