ওয়াশিংটন: চুপিসাড়েই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন(Omicron)। এবার চুপিচুপি ঢুকে পড়ছে ওমিক্রনের সাব স্ট্রেইনও। বিএ.২ (BA.2) নামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের এই নয়া রূপ ইতিমধ্যেই ৪০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। “চোরা ওমিক্রন” (Stealth Omicron)-র সংক্রামক ক্ষমতা কতটা, তা এখনও জানা না গেলেও, এটি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল এই স্ট্রেইন আরটি-পিসিআর পরীক্ষা(RT-PCR Test)-কেও ফাঁকি দিচ্ছে।
ইউরোপ জুড়ে ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের এই নতুন রূপ নিয়ে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওমিক্রনের মোট তিনটি সাব-স্ট্রেইনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এগুলি হল- বিএ.১, বিএ.২ ও বিএ.৩। বর্তমানে বিএ.১ সাব স্ট্রেইনই গোটা বিশ্বজুড়ে দাপট দেখাচ্ছে। ওমিক্রনের বিএ.১ সাব-স্ট্রেইন ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টেে পরিণত হলেও, ধীরে ধীরে বিএ.২ স্ট্রেইনও একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
ব্রিটেনে এখনও অবধি ওমিক্রনের বিএ.২ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ৪২৬ জনের খোঁজ মিলেছে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে। ওমিক্রনের নয়া রূপ প্রথম ধরা পড়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর। লন্ডনে এখনও অবধি মোট ১৪৬ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে, যা ব্রিটেনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ও করোনা সংক্রমণের জিনোম সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রাহক, এমন এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ৪০টি দেশে মোট ৮ হাজার ৪০টি ওমিক্রনের বিএ.২ রূপ ধরা পড়েছে। প্রথম সংক্রমণ ফিলিপিন্সে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ধরা পড়ে। ডেনমার্কেও ৬৪১১ জিনোম সিকোয়েন্সের মধ্যে অধিকাংশই বিএ.২ রূপ বলে জানা গিয়েছে। ভারতেও ৫৩০টি নমুনায় ওমিক্রনের এই রূপ ধরা পড়েছে। এরপরই রয়েছে সুইডেন, সেখানে ১৮১টি নমুনায় এই নতুন রূপ ধরা পড়েছে। সিঙ্গাপুরেও ১২৭ টি নমুনায় ওমিক্রন বিএ.২ ধরা পড়েছে।
যেহেতু দুই দেশেই করোনা সংক্রমণের একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়েছে, সেই কারণে ভারত ও ফ্রান্স নিয়ে বিজ্ঞানীরা বিশেষ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই দুই দেশে ওমিক্রনের বিএ.১ সাব স্ট্রেইনকেও ছাপিয়ে যেতে পারে এই নতুন স্ট্রেইন।
ওমিক্রনের এই নতুন সাব স্ট্রেইনে স্পাইক না থাকায়, তা পিসিআর পরীক্ষাকেও ফাঁকি দিচ্ছে। বিএ.১ সাব স্ট্রেইনও অনেক সময় আরটি-পিসিআর পরীক্ষাকে ফাঁকি দিলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত করতে এই পরীক্ষাই সবথেকে শ্রেয়। ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টে কমপক্ষে ৩০ বার অভিযোজন হয়েছে, তারপরও এটির স্পাইক প্রোটিন আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় চিহ্নিত হয়। তাই এই পরীক্ষা যে সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ বা নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করতে সক্ষম নয়, তা বলা চলে না বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।