নয়া দিল্লি: বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ (COVID-19) ছড়িয়ে পড়ার পর বিগত দুই বছরে সাধারণ মানুষের জীবনে এসেছে আমুল পরিবর্তন। ছোট থেকে বড়, সকলের জীবনশৈলিতেই (Lifestyle Change) এসেছে বদল। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি ছোটরাও করোনার থাবা থেকে মুক্তি পায়নি। দেশে যে সময়ে ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমছে, তখনই উদ্বেগজনক তথ্য জানালেন গবেষকরা। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (CDC) তরফে করা সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বড়দের পাশাপাশি ১৮ অনুর্ধ্বদের মধ্যেও মধুমেহ বা ডায়েবেটিসে (Diabetes) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। বিশেষত যারা করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাদের মধ্যে টাইপ-১ ও টাইপ-২ মধুমেহে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।
ডঃ অস্মিতা মহাজন ও ডঃ গুরুদত্ত ভাটের নেতৃত্বে করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মধুমেহ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। বিশেষত যারা করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠছে, তাদের মধ্যে টাইপ-১ ও টাইপ-২ ডায়েবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।
অত্যাধিক তেষ্টা ও বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলা শিশুদের মধ্যে মধুমেহের প্রধান লক্ষণ। এছাড়াও হঠাৎ করে ওজন হ্রাস হওয়াও মধুমেহ হওয়ার অন্যতম লক্ষণ। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনা অতিমারির সময়ে ছোটদের মধ্যে, বিশেষত ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে মধুমেহে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়েছে। করোনার কারণে যে লকডাউন ও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল, তার জেরে শিশুরাও বাড়িতে বন্দি হয়ে পড়েছে। অনলাইন ক্লাসের জেরে তাদের শরীর চর্চা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ও কম্পিউটারের অত্যাধিক ব্যবহারের ফলে তাদের চোখের উপরও প্রভাব পড়ছে। এরফলে মানসিক চাপ ও অবসাদের হার বাড়ছে শিশুদের মধ্যে।
শরীরচর্চা: ছোটদের সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ মিনিট শরীরচর্চা বা খেলাধুলো করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ওজন হ্রাস: অতিরিক্ত ওজনের ফলে টাইপ-২ ডায়েবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা। সেই কারণে ওজন কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিনির পরিমাণ কমানো: অনেক শিশুই অত্যাধিক পরিমাণে চকোলেট বা এমন কিছু খাবার খায়, যাতে চিনির পরিমাণ অত্যন্ত বেশী। এই ধরনের খাবার বর্জন করার পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
মোবাইলের সীমিত ব্যবহার: অনলাইন ক্লাসের জেরে এমনিতেই মোবাইল, ল্যাপটপের ব্যবহার বেড়েছে। তাই ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর শিশুরা যাতে বেশিক্ষণ মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটার ব্যবহার না করে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব অভিভাবকদেরই।
সুষম আহার: মধুমেহ এ়ড়াতে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে শিশুদের সুষম আহারের প্রয়োজন বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বয়স অনুযায়ী শিশুদের সঠিক খাবার ও পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়ার প্রয়োজন। এছাড়াও শিশুদের নিয়মিত সুগার ও গ্লুকোজের পরীক্ষা করতে হবে।