নয়া দিল্লি: সকাল থেকেই গোটা রাজ্যের নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে নির্ধারিত হওয়ার ছিল ২৬ হাজার চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু ঝুলেই রইল তা। কারণ সুপ্রিম কোর্টে এদিন পিছিয়ে গেল ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলা। সিবিআই-কে আজই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরের শুনানি ১৫ জানুয়ারি। এদিন শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দেয়, ১৫ জানুয়ারি এই মামলার সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে হবে। ‘চাকরিহারা যোগ্য’ শিক্ষকরা চাকরি ফেরতের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। আরও বাড়ল তাঁদের অপেক্ষা! তবে চাকরিহারারা জানিয়ে দিলেন, রাজপথ ছাড়ব না।
এক চাকরিহারা বললেন, “আমাদের আন্দোলন ততদিন চলবে, যতদিন আমরা চাকরি ফেরত পাচ্ছি না। যতদিন না আমরা ন্যায়বিচার পাব, ততদিন আন্দোলন চালাব। সুপ্রিম কোর্টের ওপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।”
আরেক চাকরিহারা শিক্ষক বলেন, “অসুবিধাটা সত্যিই হচ্ছে। আমাদের যখন মরণ বাঁচনের ব্যাপার, আমাদের লড়াই চালাতেই হবে।” তবে আরেকজন বললেন, সুপ্রিম কোর্টের শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ তাঁরা। এক মহিলা আন্দোলনকারী বলেন, “আমরা আজকে প্রচণ্ড হতাশ। তারিখটা পিছিয়ে গেল, তাতে। কারণ তাতে আমাদের অসম্মানের দিনগুলো আরও বাড়ল। আরও অনেকদিন আমাদের অসম্মান বহন করে নিয়ে যেতে হবে। এই রাজপথ আমরা এখন ছাড়ছি না।”
বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস বলেন, “আগের দিন যে বেঞ্চ কম্পোজিশন শুনেছিল, আজকের বেঞ্চ কম্পোজিশন ভিন্ন। আর সে কারণে আমাদের নিশ্চিতভাবে পুরো বিষয়টা নতুন করে শোনাতে হত। তাহলে অপশন ছিল নতুন করে শুরু করা। কিন্তু তা করে এই দুই বিচারপতি আবার যেদিন বসবেন, সেদিনই তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছে। ১৫ তারিখ আবার শুনানি ছিল। আজকে আমাদের বলার দিন ছিল। তাই ভালই হল। কারণ নতুন বিচারপতি এলে, তাঁকে আমাদের আবার প্রথম থেকে পুরো বিষয়টা শোনাতে হত।” উল্লেখ্য, এদিন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চে শুনানি ছিল।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২২ এপ্রিল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁরা ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করেন। তার ফলে চাকরি যায় ২৫,৭৫৩ জনের। পাশাপাশি চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয় ওই চাকরিপ্রাপকদের। কিন্তু প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ায়, চাকরিহারা হন যোগ্যরাও। আজ তাঁদেরই ভাগ্য নির্ধারণের কথা ছিল আজ। আগের শুনানিতে পুরো প্যানেল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। সিবিআই-এর রিপোর্টে পাঁচ হাজারেরও বেশি নিয়োগে যে দুর্নীতি রয়েছে, তা আগের শুনানিতেই স্বীকার করেছে নিয়েছিল রাজ্য। এদিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের বলার দিন ছিল।