Indian spy: কাজ মিটলে কোনও সরকারই গুপ্তচরদের চিনতে চায় না: শীর্ষ আদালত

Indian spy jailed in Pak for 14 years: মাহমুদ আনসারির দাবি, সত্তরের দশকে ভারত সরকারের হয়ে চরবৃত্তি করতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন তিনি। একবার নয়, দু-দু'বার। পরে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।

Indian spy: কাজ মিটলে কোনও সরকারই গুপ্তচরদের চিনতে চায় না: শীর্ষ আদালত
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 14, 2022 | 11:04 AM

নয়া দিল্লি: মাহমুদ আনসারির দাবি, সত্তরের দশকে ভারত সরকারের হয়ে চরবৃত্তি করতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন তিনি। একবার নয়, দু-দু’বার। পরে পাকিস্তানি রেঞ্জাররা তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তারপর ১৪ বছর পাকিস্তানের জেলে ছিলেন তিনি। পাক জেল থেকে ভারতে ফেরার পর থেকেই চরম অসুবিধায় পড়েছেন তিনি। একদিকে, তাঁকে আর চর বলে স্বীকার করেনি ভারত সরকার। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন অফিস না আসায় ছাঁটাই করা হয়েছে সরকারি চাকরি থেকেও। ফলে, পেনশনও মেলেনি। তবে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর), কিছুটা হলেও সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে সহায়তা পেলেন মাহমুদ আনসারি। তিনি যে ভারতের চর ছিলেন তা না মানলেও, আদালত তাকে ১০ লক্ষ টাকার এক্স গ্রাসিয়া দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।

এই গুপ্তচর কাহিনির শুরু ১৯৭২ সালে। সেই সময়ে রাজস্থানের জয়পুরে রেলওয়ে মেল সার্ভিসে কাজ করতেন মাহমুদ আনসারি। তাঁর দাবি ওই সময়ই তাঁকে পাকিস্তানে চরবৃত্তি করার জন্য পাঠিয়েছিল স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো। ১৯৭৬ সালে অবশ্য পাক রেঞ্জাররা তাঁকে ধরে ফেলেছিল। ১৯৭৮ সালে সরকারি গোপনিয়তা আইনের আওতায় তাঁকে ১৪ বছরের জন্য কারাদণ্ড দিয়েছিল পাক সরকার। তাঁর দাবি, কারাবন্দি থাকাকালীন ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে খবরও পাঠিয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৯ সালে, পাক জেল থেকে মুক্তির পর ভারতে ফিরে এসেছিলেন মাহমুদ আনসারি। ফিরে এসে তিনি জানতে পারেন, ১৯৮০ সালেই তাঁকে রেলওয়ে মেল সার্ভিসের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল এবং রাজস্থান হাইকোর্টে চাকরি খোয়া যাওয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি। তবে কোনও লাভ হয়নি।

তারপর থেকে আর্থিকভাবে তিনি পুরোপুরি তাঁর কন্যার উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সম্প্রতি বিষয়টি তিনি শীর্ষ আদালতের নজরে এনেছিলেন। সোমবার,ভারতের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ জানিয়েছে, মাহমুদ আনসারি রাজস্থানের মেল পরিষেবা বিভাগে কাজ করতেন বলে স্বীকার করেছে সরকার। তবে, ১৯৭৬ সালের পর থেকে কেন তিনি অফিসে আসতে পারেননি, তা জানাতে পারেনি সরকার। কেন তাকে দীর্ঘ অনুপস্থিতির জন্য ছাঁটাই করতে চার বছর সময় নেওয়া হল, তারও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানে যে সময় চরবৃত্তি করছিলেন বলে দাবি করেছেন মাহমুদ আনসারি, সেই সময় তিনি যে জয়পুরেই ছিলেন, এমন কোনও নথি দেখাতে পারেনি সরকার।

এরপরই কেন্দ্রকে ৫ লক্ষের এক্স-গ্রাশিয়া দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। পরে আবেদনকারীর আইনজীবীর অনুরোধ মেনে এক্স-গ্রাশিয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা হয়। ভারতের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে, “যে কোনও সরকারই তার বিশেষ এজেন্টদের অস্বীকার করে থাকে। কোনও সরকারই তাদের দায় নেয় না…সম্ভবত ঠিকই কাজই করে।” মাহমুদ আনসারিকে এক্স-গ্রাসিয়া দেওয়ার নির্দেশ দিলেও, সে সত্যি সত্যি গুপ্তচর ছিল কি না, সেই বিতর্কের সমাধান করতে যায়নি আদালত। এরপরও এক্স-গ্রাসিয়া দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই মামলার “বিচিত্র পরিস্থিতির” পরিপ্রেক্ষিতে।