নয়া দিল্লি: বৃহস্পতিবার আরজি কর-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার দ্বিতীয় শুনানি। সিল বন্ধ খামে আরজি কর কাণ্ডের তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিল সিবিআই। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে আরজি কর মামলার শুনানি হয়। শুরু থেকেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে। রাজ্যের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংভি-সহ অন্য আইনজীবীরা। আজ শুনানির দ্বিতীয় দিন। আসল অপরাধীকে খোঁজার ক্ষেত্রে সিবিআই কতটা এগল, সেটাই রিপোর্ট আকারে জমা দিল সিবিআই।
হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। প্রথম থেকেই এই মামলায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার দিন অর্থাৎ ৯ অগস্ট দেহ হাসপাতাল থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শ্মশানে ‘অতি তৎপরতার’ সঙ্গে তা দাহ করে দেওয়া পর্যন্ত, ১৪ অগস্ট রাতে হাসপাতালের ভাঙচুরের ঘটনা রুখতে ‘ব্যর্থতা’- একাধিক ক্ষেত্রে হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই। তারপর সেই মামলা সিবিআই-এর হাতে হস্তান্তরিত করে হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময়েও ভর্ৎসিত হয় রাজ্য পুলিশ।
ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় তদন্তভার হাতে পায় সিবিআই। সিবিআই এই মামলায় কত দূর তদন্ত এগল, তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। তিন দিনের মধ্যে সেই স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবারই সেই সময় সীমা শেষ হয়। এর মধ্যে ‘প্লেস অফ অকারেন্সে’ একাধিকবার গিয়েছেন তদন্তকারীরা। সেখানে ‘থ্রি ডি স্ক্যানিং’ করা হয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও বিশেষ কোনও সুবিধা করতে পারেননি তদন্তকারীরা। কারণ ‘থ্রি ডি স্ক্যানিং’ করে সেমিনার রুম থেকে কোনও সূক্ষ তথ্যই সংগ্রহ করতে পারেননি তদন্তকারীরা। কারণ সেমিনার রুম থেকে একাধিক হাতের ও পায়ের ছাপ মিলেছে। দেহ উদ্ধারের পর অকুস্থলে বহু মানুষের যাতায়াত হয়েছে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে থ্রি ডি স্ক্যানিং যে কারণে করা হয়, অর্থাৎ সূক্ষাতিসূক্ষ তথ্য সংগ্রহ, তা করা সম্ভব হয়নি সিবিআই-এর। অন্যদিকে, ধৃতের ‘পলিগ্রাফ টেস্ট’ নিয়েও একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে।
তবে আরজি কর কাণ্ডে লাগাতর বিক্ষোভ জারি। গোটা বাংলা তাকিয়ে রয়েছে সিবিআই তদন্তের দিকেই। আসল অপরাধী বেরবে কিনা, সেটাই দেখতে পথে নেমেছেন বাংলার মানুষ। এই প্রেক্ষিতে সিবিআই অত্যন্ত সাবধানে গোপনীয়তার সঙ্গে পদক্ষেপ করছেন, যাতে কোনও তথ্য ফাঁস না হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সিল বন্ধ খামে সিবিআই কী তথ্য জমা দিল, সেটাই বড় বিষয়। সুপ্রিম কোর্টে এই মুহূর্তে এই মামলার শুনানি চলছে।