নয়া দিল্লি: দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে, রাম সেতুকে জাতীয় ঐতিহ্যের মর্যাদা দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানাচ্ছেন বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে, কেন্দ্রকে পাল্টা হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিল বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচুর এবং বিচারপতি হিমা কোহলির সমন্বয়ে গঠিত এক বেঞ্চ। এদিন আদালতে উপস্থিত হয়ে স্বামী বলেন, “গত ৮ বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু, ভারত সরকার এই বিষয়ে হলফনামা দাখিল করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
এই মামলার শুরুটা হয়েছিল ২০০৭ সালে। ওই বছর প্রথম সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ‘সেতু সমুদ্রম শিপ চ্যানেল প্রোজেক্ট’এর বিরোধিতা করেছিলেন। মান্নার-এর সঙ্গে পাল্ক প্রণালীর মধ্যে ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই চ্যানেল তৈরির প্রস্তাব ছিল। কিন্তু, এই প্রকল্প রাম সেতুর ক্ষতি করবে দাবি করে প্রকল্পটির বিরোধিতা করেছিলেন স্বামী। সেই সঙ্গে রামসেতুকে জাতীয় ঐতিহ্য বলে ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন। তারপর থেকে বহুবার বিষয়টি শীর্ষ আদালতে উঠেছে। ইউপিএ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হয়ে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর এই আবেদনের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।
এর আগেই শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানির সময়, তাঁর আবেদনের উত্তর না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তিনি বলেছিলেন, “সরকারের একটি হলফনামা পেশ করে জানানো উচিত, এই বিষয়ে তারা কবে সিদ্ধান্ত নেবে। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি চলছে তো চলছেই। তাদের জবাব দেওয়া উচিত। আবেদনের বিরোধিতা করলে, সেটাও তাদের জানানো উচিত। নাহলে ধরে নিতে হবে, তারা এটা সমর্থন করে।”
রামসেতুর উল্লেখ পাওয়া যায় ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণে। মহাকাব্যিক বর্ণনা অনুসারে অযোধ্যার রানী সীতাকে রক্ষা করার জন্য সমুদ্র পেরিয়ে লঙ্কা গিয়েছিলেন রাম। সমুদ্র পার হওয়ার জন্যই এই সেতু নির্মাণ করেছিলেন রাম। বাস্তবে, তামিলনাড়ুর দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে রামেশ্বরমের কাছে পামবান দ্বীপ থেকে শ্রীলঙ্কার উত্তর উপকূলে মান্নার দ্বীপ পর্যন্ত একটি চুনাপাথরের শৃঙ্খল রয়েছে। এটিই রাম সেতু নামে পরিচিত। মহাকাব্যের রামসেতুর সঙ্গে এই চুনাপাথরের শৃঙ্খলের কোনও যোগ আছে কি না, তা অবশ্য প্রমাণিত নয়।