নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিতর্কিত ডকুমেন্টারি সম্প্রচারের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বা বিবিসি-কে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল হিন্দু সেনা। শুক্রবার, সেই মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এমএম সুন্দরেশের বেঞ্চ জানিয়েছে, আবেদনটি ভুল ধারনার ভিত্তিতে করা এবং আদালত সেন্সরশিপ জারি করতে পারে না। আবেদনকারীদের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দকে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, “সম্পূর্ণ ভুল ধারণা, এটা নিয়ে কীভাবে কোনও তর্ক হতে পারে? আপনি চান আমরা আমাদের সম্পূর্ণ সেন্সরশিপ জারি করি..এর মানে কি?”
এরপরও, তাঁদের আবেদন শোনার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেন পিঙ্কি আনন্দ। কিন্তু, আদালত তা শুনতে চায়নি। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেন, “আর সময় নষ্ট করার মানে হয় না। রিট পিটিশনটি পুরোপুরি ভুল ধারণার ভিত্তিতে করা। মামলাটি শুনানির যোগ্যই নয়। তাই এটি খারিজ করে দেওয়া হল।”
এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেছিলেন হিন্দু সেনার প্রেসিডেন্ট বিষ্ণু গুপ্তা। লিখিত আবেদনে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিবিসি বরাবরই ভারত এবং ভারত সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে। বিশ্বে বর্তমানে ভারত এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অবূতপূর্ব উত্থান ঘটছে। ‘ইন্ডিয়া: দ্য় মোদী কোয়েশ্চন’ তথ্যচিত্রটি এর বিরুদ্ধে বিবিসির ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেন, এই তথ্যচিত্রটি শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদী বিরোধী প্রোপাগান্ডার অংশই নয়, এটি হিন্দুত্ব বিরোধী প্রোপাগান্ডাও বটে। ভারতের সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করতেই বিবিসি এই তথ্যচিত্র তৈরি করেছে। বিবিসি-কে নিষিদ্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি বিবিসির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও চেয়েছিল হিন্দু সেনা। কিন্তু, আদালত মামলাটি শুনতেই চায়নি।
বিবিসির তথ্যচিত্রটি ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা এবং সেই দাঙ্গায় তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকার বিষয়ে তৈরি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি এই তথ্যচিত্রকে নিষিদ্ধ না করা হলেও, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন চ্যানেলে এই তথ্যচিত্রের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে এই তথ্যচিত্রকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন বলা হয়েছে।