নয়া দিল্লি: তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ (এ) ধারা অনুযায়ী কোনও মামলা দায়ের করা যাবে না। সোমবার সমস্ত রাজ্যকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যেক রাজ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানিয়েও দিতে হবে বিষয়টা। রাজ্যগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ বহাল হল।
তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬ (এ) ধারা নিয়ে বহুদিন ধরেই আইনি আলোচনা চলছে। ২০১৫ সালেই সর্বোচ্চ আদালত ৬৬ (এ) ধারাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে খারিজ করে দিয়েছিল। অনলাইনে কোনও আপত্তিকর পোস্ট করলে ৬৬ (এ) বলে গ্রেফতার করা আদালতের কাছে মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার খর্ব করার সমান। গত ৫ জুলাই সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, তারা বিস্মিত। কারণ, এখনও ৬৬ (এ) ধারায় মামলা দায়ের হচ্ছে। যা খারিজ হয়েছে ৫ বছর আগে। বিচারপতি জে চেলামেশ্বর এবং বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়ে বলে, ৬৬ (এ) অস্পষ্ট ও ইচ্ছামতো তৈরি হয়েছিল। সরকার এসেছে, গিয়েছে। কিন্তু ধারা রয়ে গিয়েছে।
২০১২ সালের নভেম্বর মাসে মুম্বইয়ে বাল ঠাকরের মৃত্যুর পর গোটা শহর অচল হয়ে গিয়েছিল। ফেসবুকে তারই সমালোচনা করেন শাহিন ধাদা নামে এক তরুণী। রিনু শ্রীনিবাস নামে অপর এক তরুণী ‘লাইক’ করেন সেই মন্তব্য। দুই তরুণীকেই গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এর আগে সেপ্টেম্বর, ২০১২। মুম্বই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় কার্টুনিস্ট অসীম ত্রিবেদী। সংসদ ও উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতি নিয়ে কার্টুন এঁকেছিলেন তিনি।
২০১২ থেকে রাজ্যগুলিতে লাগাতার মামলা দায়ের হতে থাকে এই আইনে’। বাদ যায়নি বাংলাও। কার্টুন-কাণ্ডে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে গ্রেফতার হয়েছিলেন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চালু রয়েছে এখনও।
সোমবার কেন্দ্র আদালতকে জানায়, সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের তালিকাভুক্ত বিষয়। এবার রাজ্যের কোর্টে বল। ৬৬ (এ)-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন লেখিকা তাসলিমা নাসরিন, রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর থেকে পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ। দীর্ঘ প্রায় এক দশকের লড়াইয়ের ফসল কোর্টের এই নোটিস। আরও পড়ুন: স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আপনার কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত শুনবে গোটা দেশ; অভিনব উদ্যোগ সংস্কৃতি মন্ত্রকের, রইল লিঙ্ক…