নয়া দিল্লি: আর জি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে প্রথম থেকেই নাস্তানুবুদ রাজ্য। সবথেকে বেশি যে প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজ্য নাজেহাল, তা হল ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর কীভাবে UD কেস অর্থাৎ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু হল? বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে।
শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি বলেন, “এটা বিষয় অত্য়ন্ত বিস্ময়ের। সকাল ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ টালা থানা অভিযোগ দায়ের করল। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থল সিল করল পুলিশ? এত ক্ষণ সেখানে কী হয়েছিল?” রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, বিষয়টি এমন নয়। সব কিছুর ভিডিয়োগ্রাফি রয়েছে। সেই টাইমলাইনের বিষয়ে প্রথমে প্রধান বিচারপতি দৃষ্টি দেননি। বারবার সে বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল।
এরপর সেটি নেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা। তিনি আইনজীবী কপিল সিব্বলের কাছে জানতে চান, “আপনার টাইমলাইন অনুযায়ী ময়নাতদন্ত কখন হয়েছে? আইনজীবী সিব্বল জানান, সন্ধ্যা ৬.১০ মিনিট থেকে ৭.১০ মিনিট। বিচারপতি তখন জানতে চান, সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার পর কীভাবে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু হল? আর যদি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা না-ই হয়ে থাকে, তাহলে ময়নাতদন্তের কী প্রয়োজন ছিল?” সেক্ষেত্রে উত্তর দিতে পারছিলেন না আইনজীবী কপিল সিব্বল।
বিচারপতি আরও বলেন, “যখন আপনি ময়নাতদন্ত করছেন, তার মানে এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা। যখন সন্ধ্যা ৬টা১০ মিনিট থেকে ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে ময়নাতদন্ত করা হয়ে যায়, তাহলে রাত সাড়ে ১১টার সময়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করার কী প্রয়োজন ছিল?” এখানেও চাপে পড়ে রাজ্য। রাজ্যের তরফে আইনজীবী সিব্বল উত্তর দেন, “না, এটা এফআইআর, কেবল UD কেস নয়।”
কিন্তু আইনজীবী সিব্বলের উত্তরের সূত্র ধরেই বিচারপতি পারদিওয়ালা তখন জানতে চান, “যে রেকর্ড হাতে এসেছে, তাতে ৯ অগস্ট টালা থানায় UD কেস ৮৬১ দায়ের হয়। সেটি দায়ের হয় রাত সাড়ে এগারোটায়। এফআইআর দায়ের হয় রাত ১১.৪৫ মিনিটে। এটা কি সঠিক?”
আইনজীবী সিব্বল বলেন, “আমাদের কাছে গোটা টাইমলাইন রয়েছে। UD কেস দায়ের হয় দুপুর ১.৪৫ মিনিটে।” সলিসেটর জেনারেল তখন বলেন, “না এই তথ্য একেবারেই ঠিক নয়। বিচারপতি তখন পুলিশের কোনও আধিকারিক আদালতে উপস্থিত রয়েছেন কিনা তা জানতে চান, তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান।” সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ আধিকারিককে সুপ্রিম কোর্টে পরের শুনানিতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন তিনি। যাতে ময়নাতদন্তের পর কেন UD কেস, তার ব্যাখ্যা তিনি আদালতে দিতে পারেন। বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, “পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিন্টেন্ডেন্ট কে? তদন্তে তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমন ভাবে তদন্ত হল?” তিলোত্তমার ময়নাতদন্ত পর প্রথম অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের প্রসঙ্গে ভর্ৎসিত হতে হয় রাজ্য, পুলিশ প্রশাসনকেও।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)