নয়া দিল্লি: কে কোথায় বদলি নেবেন, আর কোথায় থাকবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা রয়েছে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ সংস্থার। কর্মচারীর এ ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নেই। গত ৬ সেপ্টেম্বর একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এমনই পর্যবেক্ষণের কথা জানায় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমআর শাহ এবং অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চ এক মামলার শুনানি করার সময় এই পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করেন।
মামলার পর্যবেক্ষণে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “কোথায় কাকে স্থানান্তর করা হবে, বা কোথায় রাখা হবে সেই সিদ্ধান্ত কর্মচারীর নয়, বরং নিয়োগকর্তার। সংশ্লিষ্ট সংস্থাই তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঘটনা হচ্ছে, ২০১৭ সালের একটি মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের একটি কলেজের অধ্যাপক। এলাহাবাদ হাইকোর্টও নিজের রায়ে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়োগকারী সংস্থার পক্ষেই রায় দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়েও কার্যত হাইকোর্টের রায়ের প্রতিধ্বনিই শোনা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, আমরোহার রাজকীয় মহাবিদ্যালয়ের মনোবিদ্যার এক মহিলা অধ্যাপক ২০১৭ সালে নয়ডার একটি কলেজে নিজের বদলি চেয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু বছর চারেক পর শীর্ষ আদালতও তাঁর আবেদন খারিজ করে দিল।
বদলির আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর পক্ষ থেকে যুক্তি খাড়া করে বলা হয়েছিল, তিনি ৪ বছর আমরোহায় চাকরি করেছেন। যে কারণে সরকারি নীতি অনুযায়ী তিনি বদলির আবেদন করতেই পারেন। তবে এই নিয়ে আদালতের পাল্টা বক্তব্য, কর্মচারী কখনই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না তিনি কোথায় বদলি নেবেন। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ এক্তিয়ার নিয়োগকর্তার। এ ক্ষেত্রে সেই ভূমিকায় ছিল রাজ্য সরকার।
এই বদলির আবেদনে ক্ষেত্রে আরও একটি বিষয়ে আপত্তি তুলেছে আদালত। দেখা গিয়েছে, আবেদনকারী ২০০০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত টানা ১৩ বছর যে কলেজে কর্মরত ছিলেন, সেখানেই বদলির আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, এহেন আবেদন জানানো সঠিক নয়।
আরও পড়ুন: Mukul Roy: উধাও মুকুলের নেমপ্লেট, রাজধানীর ১৮১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউতে যেন শ্মশানের নীরবতা
আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়, আবেদনকারী যেখানে ইতিমধ্যেই ১৩ বছর কাজ করেছেন, সেখানেই নতুন করে তিনি বদলি চাইতে পারেন না। এই মামলার ক্ষেত্রে মামলাকারী একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় কাজ করেছেন, তিনি চাইলে অন্যত্র কোথাও বদলির আবেদনও জানাতে পারেন, কিন্তু যেখানে ইতিমধ্যেই ১৩ বছর কাজ করেছেন সেখানে নয়।
আরও পড়ুন: Bhawanipur Bypoll: বুথপ্রতি দু’জন করে এজেন্ট! তৃণমূলের চেনা ছকেই মমতাকে ফাঁদে ফেলতে চায় বিজেপি