নয়া দিল্লি: সুপ্রিমকোর্টেও ধাক্কা খেলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। তাঁকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিলেন হেমন্ত। কিন্তু শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি), তাঁর আবেদন শুনতেই অস্বীকার করল আদালত। তাঁকে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হেমন্ত সোরেনের হয়ে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিবাল। তিনি আদালতে যুক্তি দেন, ইডি ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে, তাঁর এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দেননি বিচারপতিরা। ইডির পক্ষে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন, “এই ক্ষেত্রে বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ এই ধরনের সুযোগ পান না।” বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, “হাইকোর্টও সাংবিধানিক কোর্ট। আদালত সবার জন্য সমান। যদি একজনকে সুযোগ দেওয়া হয়, তবে আমাদের প্রত্যেককে সুযোগ দিতে হবে।”
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চে বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিবাল এবং অভিষেক মনু সিংভি এই মামলাটির উল্লেখ করেছিলেন। এদিন, হেমন্ত সোরেনের আবেদন শোনার জন্য, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর সমন্বয়ে, এক তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে শীর্ষ আদালত। কপিল সিবাল বলেন, “বিষয়টি একজন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কিত। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এইভাবে ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” শীর্ষ আদালত, হেমন্ত সোরেনকে হাইকোর্টে যাওয়র পরামর্শ দিলে, অভিষেক মনু সিংভি বলেন, “এই আদালতেরও এই মামলার শুনানির ক্ষমতা রয়েছে।” কিন্তু, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বিশেষ সুবিধা দিতে রাজি হয়নি আদালত। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে জানান, “আজই ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি হবে।
বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় হেমন্ত সোরেনকে। বৃহস্পতিবার, আদালতে তাঁকে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল ইডি। কিন্তু, আদালত তাঁকে একদিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে করা তাঁর আবেদনে হেমন্ত সোরেন দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সংস্থাটি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে অসৎ উপায় অবলম্বন করছে তারা। তিনি তাঁর গ্রেফতারিকে “অবৈধ এবং এক্তিয়ার বহির্ভুত বলেছেন। তিনি বলেছেন, “ইডি নির্লজ্জভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কথায় কাজ করছে।” অন্যদিকে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অভিযোগ, ৬০০ কোটি টাকার জমি কেলেঙ্কারি এবং আর্থিক নয়ছয়ের সঙ্গে যোগ রয়েছে হেমন্ত সোরেনের। এরই মধ্যে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা চম্পাই সোরেন আজ ঝাড়খণ্ডের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন।