‘প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছি’, বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে গুজরাট সরকারকে ‘সুপ্রিম’ ভর্ৎসনা

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঋদ্ধীশ দত্ত

Aug 27, 2021 | 7:24 PM

শীর্ষ আদালতের নির্দেশে লেখা হয়েছে, "অতিমারির মধ্যে আমরা প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলছি।"

প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছি, বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে গুজরাট সরকারকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা
সূত্রের খবর, ৪০ তলার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩২ তলা পর্যন্ত কাজ হয়ে গিয়েছিল, এবং প্রায় ৬৩৩ জন ফ্ল্যাট বুকও করে ফেলেছিলেন। এদের মধ্যে ২৪৮ জন টাকা ফেরত নিয়েছেন, ১৩৩ জন অন্য বহুতলে ফ্ল্যাট নিয়েছেন। কিন্তু ২৫২ জন এখনও অপেক্ষা করছিলেন আদালতের পক্ষ থেকে কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসার।

Follow Us

নয়া দিল্লি: কোভিডকালে দ্রুত হাসপাতাল তৈরির ছাড়পত্র দিতে গিয়ে একটা মোক্ষম এবং বিপজ্জনক ‘ভুল’ করে বসেছিল গুজরাট সরকার। যার জন্য শুক্রবার বিজয় রূপানি সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে লেখা হয়েছে, “অতিমারির মধ্যে আমরা প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলছি।”

ঘটনা হচ্ছে, গত জুলাই মাসের ৮ তারিখ গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। যেখানে জানানো হয়, আগামী বছর মার্চ মাস পর্যন্ত ‘বিল্ডিং ব্যবহারের অনুমতি পত্র’ ছাড়া তৈরি বহুতলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এই বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “গুজরাট সরকারের বিজ্ঞপ্তি জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ব্যবস্থার পরিপন্থী। মহামারীতে প্রাণ বাঁচানোর প্রচেষ্টায় আমরা মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারছি।”

গত এক বছরে গুজরাটের একাধিক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে গত বছর অগস্ট মাসে গুজরাটের শ্রেয় হাসপাতালে আগুনে পুড়ে ৮ কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর নভেম্বর মাসে রাজকোটের উদয় শিবানন্দ হাসপাতালে একই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৬ জনের। মে মাসে ভারুচের এক হাসপাতালে ১৮ জন মারা যান আগুন লেগে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতি ক্ষেত্রেই আগুন ছড়িয়েছিল আইসিইউ থেকে।

একের পর এক এই ধরনের ঘটনার পরও রাজ্য সরকারের গা ছাড়া মনোভাব দেখে তাজ্জব হয় সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনাগুলির পরই আদালতের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে হাসপাতালগুলির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও গুজরাট সরকারের সম্বিত ফেরেনি। বিচারপতি এ দিন বলেন, “এমন হাসপাতাল রয়েছে যেগুলি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রয়োজনীয় অনুমতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই চলছে। আমরা প্রতিনিয়ত শুধুমাত্র আইন লঙ্ঘনকারী নির্মাণ সংস্থাকে ছাড় দিয়ে চলেছি।”

বিচারপতি শাহ এই প্রসঙ্গে গুজরাট সরকারকে মনে করিয়ে দেন, “আপনারা নিজেদের আইসিইউ-র দশা দেখেছেন? একটা ছোট্ট ঘরে ৭-৮ টা করে বিছানা। আইসিইউ নিয়ে আমরা কোনও নির্দেশ দিচ্ছি না কারণ সকলেই আপাতকালীন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আইসিএমআর-এর নিয়ম মানলে ৮০ শতাংশ আইসিইউ বন্ধ করে দিতে হয়।”

গুজরাট সরকারের বিপজ্জনক বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “সরকার যদি এই ধরনের বহুতলগুলিকে চালু রাখার অনুমতি দেয় তাহলে সেটা একেবারেই নিরাপদ নয়। আপানারা এমন কোনও নার্সিং হোম তৈরি করতে পারেন না যা কিনা ৫ তলা অথচ তাতে কোনও লিফট নেই। বা বেরোনর পথ ঠিক নেই। আমরা এসব বিষয়ে ছাড় দিতে থাকলে তা বিপজ্জনক আকার নেবে।” আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানেও ‘মুকুল’ কাঁটা বিধানসভায়, স্পিকারকে এড়িয়ে পিএসি ফেরত চাইলেন শুভেন্দু

Next Article