জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানেও ‘মুকুল’ কাঁটা বিধানসভায়, স্পিকারকে এড়িয়ে পিএসি ফেরত চাইলেন শুভেন্দু

অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্পিকার-সহ শাসকদলের প্রতিনিধি ও আয়োজকদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন বিরোধী দলের বিধায়করা। কিন্তু এ বছর সেই ছবি অধরা।

জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানেও 'মুকুল' কাঁটা বিধানসভায়, স্পিকারকে এড়িয়ে পিএসি ফেরত চাইলেন শুভেন্দু
জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিধানসভায় শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 27, 2021 | 6:01 PM

কলকাতা: জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানেও বিঁধে রইল সেই পিএসি কাঁটা। যতক্ষণ না সেই জট কাটছে, ততক্ষণ সৌজন্য রক্ষার্থেও শাসকপক্ষের সঙ্গে তিনি এক মঞ্চ ভাগ করবেন না। শুক্রবার স্পষ্টত এই বার্তা দিয়ে রাখলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

শুক্রবার বিধানসভা জন্মাষ্টমী পুজো কমিটির উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বিধানসভার কর্মীরা। চলতি বছর এই অনুষ্ঠান পা দিয়েছে ৫৯ তম বর্ষে। সাধারণত অন্যান্য বছর দেখা যায়, অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্পিকার-সহ শাসকদলের প্রতিনিধি ও আয়োজকদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন বিরোধী দলের বিধায়করা। কিন্তু এ বছর সেই ছবি অধরা।

জন্মাষ্টমী পুজোর উদ্বোধন উপলক্ষে এ দিন আমন্ত্রিত ছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ প্রমুখ। প্রথাগতভাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা ও বাকিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দুপুর ৩টে নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। কিন্তু যতক্ষণ স্পিকার মঞ্চে বসে ছিলেন, ততক্ষণ বিরোধী দলনেতাকে বিধানসভায় ঢুকতে দেখা যায়নি।

বিমানবাবু বেরিয়ে যাওয়ার প্রায় মিনিট ৪০ পর সপারিষদ বিধানসভায় ঢোকেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মনোজ টিগ্গা, চন্দনা বাউরি-সহ বিজেপির বেশ কয়েকজন বিধায়ক। বিধানসভায় পৌঁছে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন তিনি। এরপর বেরিয়ে যাওয়ার সময় যখন স্পিকারের সঙ্গে তাঁর মঞ্চ ভাগ না করা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, শুভেন্দু নির্লিপ্তভাবে বলেন, শাসকদল যেন আগে পিএসিটা ছাড়ে। তাহলেই সব সমস্যা মিটে যাবে। স্পিকারের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ না করলেও আয়োজকদের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, এই অনুষ্ঠানে কোনও বিভাজন নেই।

অনুষ্ঠানে হাজির স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

শুভেন্দুর এহেন আচরণকে স্পিকার অবশ্য খুব একটা ভাল চোখে দেখেননি। বিষয়টি বিরোধী দলনেতার ‘ব্যক্তিগত ব্যাপার’ বলে উল্লেখ করলেও শেষে তিনি জুড়ে দেন, “তবে আমার মনে হয় বিধানসভা সবার জন্য। এই অনুষ্ঠানে সবার আসা উচিত। এর আগেও যারা বিরোধী দলে ছিলেন তাঁরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন। আমি প্রত্যাশা করব আগামিদিনে তাঁদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। মর্যাদাটা রাখবেন।” বিমানবাবু আরও বলেন, “বিধানসভা কী, এর গরিমা কোথায়, এবং রীতিনীতি সম্পর্কে তাঁদের আরেকটু অনুধাবন করা উচিত, উপলব্ধি করা উচিত। সেটা করলে নিশ্চই তাঁরা বুঝতে পারবেন এর মর্যাদা রাখার দায়িত্ব সবার।”

ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই বিধানসভায় পিএসি-র তৃতীয় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্য়ান মুকুল রায় সেই বৈঠক এড়িয়ে যান। পূর্ব ঘোষণা মতো তৃতীয় বৈঠকও বয়কট করলেন বিজেপি বিধায়করা। মুকুলের অনুপস্থিতিতে বৈঠকে চেয়ারম্যান ছিলেন তাপস রায়। সওয়া ঘণ্টা বৈঠক চলে। সেখানে পঞ্চায়েত দফতরের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে খবর। মুকুল অসুস্থতার কারণেই বৈঠকে হাজির থাকেননি বলে খবর। ইতিমধ্যেই মুকুল রায় দলত্যাগ ইস্যুতে স্পিকারের কাছে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে ১ মাস সময় চেয়েছেন। আরও পড়ুন: সারদা-কাণ্ডে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিল ইডি, নাম রয়েছে দুই সাংবাদিকের