Jallikattu Festival Controversy: ষাঁড়ের সঙ্গে মানুষের লড়াই, যুদ্ধ থামাতে আদালতে ছুট! জাল্লিকাট্টু নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
Jallikattu Festival Controversy: প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই ভিড়ের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় ষাঁড়। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে খেলোয়াড় ষাঁড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সেই হবে বিজয়ী।
তামিলনাড়ুতে শুরু হয়ে গেল শুরু হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী জাল্লিকাট্টু উৎসব ২০২৫। ষাঁর এবং মানুষের মধ্যে চরম লড়াই। পোঙ্গল উৎসবের সময় চলে এই খেলাও। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই ভিড়ের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয় ষাঁড়। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে খেলোয়াড় ষাঁড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সেই হবে বিজয়ী।
তবে কেবল প্রাচীন রীতিই নয়, এই প্রথার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু বিতর্ক। পশু অধিকার সংস্থাগুলির প্রতিবাদ এবং সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দেওয়ার পরেও এই প্রথা বন্ধ হয়নি। এই উৎসব তামিল সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু কেন বারবার বিতর্ক তৈরি হয় এই উৎসব নিয়ে?
কী এই জাল্লিকাট্টু?
এই খবরটিও পড়ুন
জাল্লিকাট্টু দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত, জালি মানে মুদ্রা আর কাট্টু মানে বাঁধা। প্রথা অনুসারে, মানুষ এবং ষাঁড়ের মধ্যে এই খেলায়, ষাঁড়ের ধারালো শিংয়ে টাকার ছোট ব্যাগ বেঁধে দেওয়া হয়। যে ষাঁড় নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাগ নিয়ে আসে তাকে বিজয়ী বলে গণ্য করা হয়।
প্রথম তিনটি ষাঁড় একে একে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে কয়েক সেকেন্ডের জন্যও ষাঁড়কে থামাতে সফল হয়। তাকে বিজয়ী মনে করা হয়। যদি কেউ ১৫ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ষাঁড়টিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তবে ষাঁড়টিকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।
জাল্লিকাট্টুর ইতিহাস ২৫০০ বছরের পুরনো –
তামিলনাড়ুর মানুষ ষাঁড়কে শিবের বাহন মনে করে। প্রাচীনকালে ষাঁড়ের শিংয়ে সোনা ও রুপোর মুদ্রা বেঁধে রাখত। আগে মহিলারাও যে পুরুষ ষাঁড়কে হারাতে পারত। তাঁকে স্বামী হিসাবে বেছে নিতেন। সঙ্গে বিজেতা উপহার হিসেবে সোনা ও রুপোর মুদ্রা পেতেন। এই ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের পুরনো। তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল উৎসবের তৃতীয় দিনে ষাঁড়ের পুজো করার পর জাল্লিকাট্টুর আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ নিয়ে বরাবরই বিতর্ক রয়েছে। পশুপ্রেমীদের দাবি এই খেলায় ষাঁড়দের নির্যাতন করা হয়। মানুষও মারা যায়। তাই এটা বন্ধ হওয়া উচিত।
২০০৬ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্ট এই খেলা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টও বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ২০১৭ সালে তামিলনাড়ুতে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে, রাজ্য সরকার এই খেলার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়। তবে খেলার নিয়মে কিছু পরিবর্তন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময়, তামিলনাড়ু সরকারের বক্তব্য ছিল এই খেলা কেবল বিনোদন নয়, রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং ধর্মীয় বিশ্বাস জুড়ে আছে এর সঙ্গে।
২০২৩ সালে, বিচারপতি কে.এম. জোসেফের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জাল্লিকাট্টু সম্পর্কিত তামিলনাড়ু সরকারের নিয়মকে বৈধ বলে বহাল রাখে। রাজ্য সরকারের বক্তব্যে সিলমোহর দেয় আদালত।