চেন্নাই: নিজের রাস্তা একেবারে নিষ্কন্টক করে নিলেন তামিলনাড়ুর বিরোধী দল এআইএডিএমকের নেতা এডাপাড্ডি কে পালানিস্বামী। দলের মধ্যে তাঁর একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েম করতে আর বাধা রইল না। দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে, দিন কয়েক আগেই তিনি বরখাস্ত করেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও পনিরসেলভামকে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) পনিরসেলভামের ছেলে এবং আরও ১৭ জন নেতাকে বরখাস্ত করে নিজের রাস্তা পুরোপুরি সাফ করলেন এই দক্ষিণী নেতা। বরখাস্ত হওয়া১৭ জনই পানিরসেলভাম-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। সূত্রের খবর, আগামী সোমবারই পালানিস্বামীকে এআইএডিএমকে দলের একক সর্বোচ্চ নেতা ঘোষণা করা হবে। দলের অতি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ পরিষদের বৈঠক নিয়ে যে বাধা ছিল, তা মাদ্রাজ হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে কেটে গিয়েছে। ওই বৈঠক করার অনুমোদন দিয়েছে আদালত।
এদিন যে ১৮ জন নেতাকে দল থেকে বরখাস্ত করল এআইএডিএমকে, তাঁদের মধ্যে আছে থেনি কেন্দ্র থেকে দলের সাংসদ রবীন্দ্রনাথ, ও পনিরসেলভামের ছেলে জয়প্রদীপ এবং রজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ভেল্লামান্ডি এন নটরাজন। পালানিস্বামী ওরফে ইপিএস এবং দলের বেশ কিছু বিশিষ্ট নেতার অভিযোগ, পনিরসেলভাম ওরফে ওপিএস এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা তলায় তলায় ক্ষমতাসীন ডিএমকে দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। এআইএডিএমকে দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছিলেন।
এতদিন, এআইএডিএমকে দল চলত ইপিএস এবং ওপিএস-এর দ্বৈত-নেতৃত্বের মডেলে। ওপিএস ছিলেন দলের কো-অর্ডিনেটর এবং এবং ইপিএস জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটর। সম্প্রতি, দলের সাধারণ পরিষদ দুটি পদই তুলে দিয়ে পালানিস্বামীকেই দলের অন্তর্বর্তীকালীন সাধারণ সম্পাদকের পদে উন্নীত করেছে। আড়াই হাজারেরও বেশি সদস্য নিয়ে গঠিত এআইএডিএসকে সাধারণ পরিষদ ইপিএসকেই একক সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দল পরিচালনার ক্ষমতা দিয়েছে। আর সেই ক্ষমতা হাতে পেতে না পেতেই, দল থেকে ওপিএস এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের ছেঁটে ফেললেন ইপিএস।
সোমবার, এআইএডিএমকে-র সাধারণ পরিষদের বৈঠক রয়েছে। ইপিএসের নেতৃত্বাধীন ওই বৈঠকের উপর স্থগিতাদেশ জারি করার জন্য মাদ্রাজ হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ওপিএস। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে আগামী সোমবার ‘আম্মা’ জয়ললিতার দলের একক দায়িত্ব নেওয়ার রাস্তা ইপিএস-এর জন্য একেবারে পরিষ্কার হয়ে গেল। দল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর, তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওপিএস এখন কী করেন, সেটাই দেখার। কেন্দ্র ১৫ জুলাই থেকে ৭৫ দিনের জন্য সকল প্রাপ্তবয়স্ককে বিনামূল্যে বুস্চার ডোজ দিচ্ছে বলে, বৃহস্পতিবারই পনিরসেলভাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এটা নিছক ধন্যবাদ জ্ঞাপন না কোনও বিশেষ বার্তা প্রেরণ, এই চর্চা শুরু হয়েছে দক্ষিণী রাজ্যটির রাজনৈতিক মহলে।