নয়া দিল্লি: সকালে হাসিমুখে ঢুকেছিলেন সিবিআই দফতরে। বেরলেন আট ঘণ্টা পার করে, চোখেমুখে ফুটে উঠেছে ক্লান্তির ছাপ।শনিবার রাতে সিবিআই দফতর থেকে কার্যত বিধ্বস্ত চেহারায় বের হতে দেখা গেল বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে। জমির বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতির তদন্তেই শনিবার সিবিআই দফতরে তলব করা হয়েছিল তেজস্বী যাদবকে। তাঁকে টানা আট ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে তেজস্বী একা নয়, তাঁর বোন মিশা ভারতীকেও টানা ৯ ঘণ্টা জেরা করে ইডি।
গত সপ্তাহেই দিল্লি হাইকোর্টে তেজস্বী যাদব জানিয়েছিলেন, সিবিআইয়ের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেবেন তিনি। সেই মতোই শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সিবিআইয়ের সদর দফতরে পৌঁছন তেজস্বী যাদব। দিনভর জেরা করার পর রাত ৮টা নাগাদ সিবিআইয়ের দফতর থেকে বের হন তেজস্বী যাদব। মাঝে কেবল মধ্যাহ্নভোজের জন্য ৯০ মিনিট সময় পেয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে সিবিআইয়ের দফতর থেকে বাইরে যেতে দেখা যায়।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, জমির বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতিতে তেজস্বী যাদবের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য জানতেই একাধিক প্রশ্ন করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে এখনই তেজস্বী যাদবকে গ্রেফতার করা হবে না বলেই জানা গিয়েছে। গত সপ্তাহেই সিবিআই দিল্লি হাইকোর্টে জানায় যে এই মাসে তেজস্বী যাদবকে গ্রেফতার করা হবে না। অন্যদিকে, সিবিআই কোর্টের তরফে লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী ও মিশা ভারতীকে জামিন দেওয়া হয়।
সিবিআই দফতর থেকে বের হওয়ার পর তেজস্বী যাদব জানান, তিনি তদন্তকারী সংস্থার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমায় যা কিছু প্রশ্ন করা হয়েছে, তার সবকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। অন্যরা কী বলছে, তাতে যায়-আসে না। কোনও দুর্নীতি হয়নি। সকলেই জানেন, আসলে কী হচ্ছে।”
সিবিআই-ইডির অভিযোগ, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালু প্রসাদ যাদব রেলে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে বিহারের একাধিক জমি নিজের ও পরিবারের নামে করে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সিবিআই চার্জশিটে বলা হয়, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল অবধি রেলে চাকরির বদলে কম মূল্য়ে বা বিনামূল্যেই জমি দেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় রেলওয়ের নিয়োগের নিয়ম না মেনেই এই নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, জমির বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।