হায়দরাবাদ : সদ্য উন্মোচিত ‘স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি’ (Statue of Equality) এবং দিব্য সাকেতম (108 Divya desams) আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল। তবে নির্দিষ্ট সময়সীমা অবধি জনসাধারণ এইখানে প্রবেশ করতে পারবেন। দুপুর ৩ টে থেকে সন্ধে ৬:৩০ টা অবধি জনসাধারণের জন্য খোলা থাকবে এই স্থান। তবে প্রবেশের জন্য় খুব সামান্য এন্ট্রি ফি দিতে হবে দর্শনার্থীদের। তবে এই মুহূর্তেই জনসাধারণ রামানুচার্যের সোনার মূ্র্তি দর্শন করতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি করে জানানো হয়েছে কিছু যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য 3D ম্যাপিং শো (লাইট অ্যান্ড সাউন্ড লেজার শো) দেখতে পাবেন না জনসাধারণ। তবে এই দুই বিষয় ঠিক হলেই তা কর্তৃপক্ষের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হবে।
১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন। তিনি সেদিন মুচিনতলের জেআইভিএ (JIVA) আশ্রমের ‘স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি’ ক্যাম্পাসে শ্রী রামানুচার্যের সোনার মূর্তি উদ্বোধন করেছিলেন। তিনি সেদিন শ্রী রামানুচার্যের সহস্রাদি বার্ষিকীতেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই ২১৬ ফুট উচ্চতার স্ট্য়াচু অফ ইক্যুয়ালিটি এর উদ্বোধনে ৫ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হায়দরাবাদের রঙ্গারেড্ডি জেলায় একাদশ শতাব্দীর বৈষ্ণব সাধক শ্রীরামানুজাচার্জের এই স্ট্যাচু অফ ইক্যুয়ালিটি উন্মোচনের যজ্ঞানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন মোদী।
একাদশ শতাব্দীর সমাজ সংস্কারক ও দার্শনিক সন্ত রামানুচার্যের ১০০৩ তম জন্ম বার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতেই ২১৬ ফুটের এই বিশালাকার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। তেলঙ্গনায় হায়দরাবাদের নিকটস্থ সামশাবাদে ৪৫ একর জমির উপর এই মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ৫৯৭ ফুট উচ্চতার স্ট্যাচু অব ইউনিটির পর এটিই দেশের দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তি। গোটা বিশ্বে বসে থাকা মূর্তির উচ্চতা অনুযায়ী বিশ্বে এটি দ্বিতীয় উচ্চতম মূর্তি। ১০১৭ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ত রামানুচার্য। ২০১৭ সালে তাঁর জন্মের এক হাজার বছর পূর্ণ হয়। তিনি গোটা ভারত ঘুরে সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষদের জীবনযাত্রাকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। ভক্তদের বিশ্বাস, যে ভগবান আদিষা নিজেই রামানুচার্যের অবতার গ্রহণ করেছেন। তিনি কাঞ্চি অদ্বৈত পণ্ডিতদের অধীনে বেদান্তে শিক্ষিত। দেশজুড়ে তিনি বিশিষ্ট দ্বৈত চিন্তাধারার প্রসার ঘটান এবং মন্দিরগুলিকে ধর্মীয় কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন। তার কৃপাতেই সকলে মুক্তি অষ্টাক্ষরী মন্ত্র “ওম নমো নারায়ণ”-র সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। সাম্য, স্নেহ এবং ভক্তির মার্গই হল ঈশ্বরপ্রাপ্তির শ্রেষ্ঠ পন্থা, এই মন্ত্রই আজীবন অনুসরণ করেছেন তিনি। চিন্না জিয়ার স্বামীও রামানুজের এই আদর্শের উপর ভর করেই এই সাম্যের মূর্তি তৈরির কাজে হাত দেন।
স্ট্যাচু অব ইকুয়্যালিটি গোটা বিশ্বে আধ্যাত্মিকতা, সমতা এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব নিয়ে একটি বিশেষ বার্তা দেয়। ২১৬ ফুট লম্বা রামানুজের মূর্তি, এবং ১০৮ টি মন্দির, দুই ক্ষেত্রেই সংখ্যাগুলির যোগফল হয় ৯। এমনকি, এই মূর্তি তৈরির কাজে ১৮০০ টন পঞ্চধাতু ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও সংখ্যাগুলির যোগফল ৯। যেহেতু ৯ সংখ্যাটিকে নানাভাবে শুভ বলে মনে করা হয়। সেই কারণেই এই সংখ্যা নানাভাবে মেলানো হয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন : UP Assembly Election 2022 : যোগীরাজ বজায় থাকলে হোলিতে ‘দুয়ারে’ সিলিন্ডার, প্রতিশ্রুতি শাহের