রায়পুর: শিখদের ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ দায়ের। আমেরিকার শিখদের পাগড়ি নিয়ে মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে ছত্তীসগঢ়ে তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৯৯ এবং ৩০২ ধারায় রায়পুর, বিলাসপুর এবং দুর্গ জেলায় অভিযোগগুলি দায়ের হয়েছে।
সম্প্রতি আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন রাহুল। ভার্জিনিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতে ধর্মপালনের স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে শিখদের পাগড়ির প্রসঙ্গ টানেন তিনি। লোকসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, “শিখদের পাগড়ির পরার অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে লড়াই চলছে। একজন শিখকে কাড়া পরতে দেওয়া হবে কি না, তাঁকে গুরুদ্বারে যেতে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে লড়াই চলছে। এটা শুধু শিখদের জন্য নয়। এটা সব ধর্মের জন্য।”
রাহুলের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বিজেপি। কেন্দ্রীয় হরদীপ পুরীও বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের সমালোচনা করেন। কয়েকদিন আগে গুজরাটে একটি অনুষ্ঠানে নাম না করে রাহুলকে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রীও। তিনি বলেন, “নেতিবাচকতায় পূর্ণ কিছু ব্যক্তি ভারতের ঐক্যকে আঘাত করতে চাইছে। যাঁদের মন ঘৃণায় ভরা, তাঁরা ভারত ও গুজরাটের বদনাম করার কোনও সুযোগ ছাড়ছে না।”
এবার রাহুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হল। ছত্তীসগঢ়ের তিন জায়গায় বিজেপি নেতারা রাহুলের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রায়পুর ও বিলাসপুর জেলার দুটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। আর শুক্রবার দুর্গ জেলার কোতয়ালি থানায় FIR দায়ের হয়েছে। শিখদের পরম্পরাকে অশ্রদ্ধা করার অভিযোগে রাহুলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা।
রায়পুরে রাহুলের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন অমরজিৎ সিং ছাবরা। তিনি বলেন, “ভারত তথা সারা বিশ্বে কোথাও শিখদের তাঁদের পরম্পরা পালনে বাধা দেওয়া হয় না। গুরুদ্বারে গেলে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পাগড়ি পরেন। রাহুল গান্ধীর মন্তব্য অপমানজনক এবং বিদ্বেষ ছড়াতে পারে।” বাকি দুই অভিযোগকারীরও একই বক্তব্য। শিখদের পাগড়ি নিয়ে মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ দায়ের হতে পারে বলে জল্পনা।
এর আগে ২০১৯ সালে মোদী পদবি নিয়ে রাহুলের এক মন্তব্যে বিতর্ক বাড়ে। গত বছর আদালত ওই মামলায় ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল রাহুলকে। যার জেরে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে স্বস্তি পান রাহুল। সাংসদ পদও ফিরে পান। এবার শিখদের পাগড়ি নিয়ে মন্তব্যের জেরে একের পর এক অভিযোগ দায়ের হয়েছে রাহুলের বিরুদ্ধে। এই মামলার রেশ কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।