নয়া দিল্লি : গতকালই তৃণমূল দাবি করেছিল যে তাঁরা কোনও দলের নেতৃত্বে হওয়া কর্মসূচিতে না গেলেও কেন্দ্র বিরোধী ইস্যুতে একজোট হয়ে লড়াই করতে রাজি। এবার সেই ছবিই দেখা গেল আজ। লোকসভায় কেন্দ্রের আনা সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন বিল নিয়ে সরব হল দুই দলই। লোকসভায় দুই বিল এনেছে কেন্দ্র। সিভিসি (সংশোধনী) বিল ও দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট (সংশোধনী) বিল। এতদিন পর্যন্ত সিবিআই ও ইডি-র কর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ২ বছর। এই বিল অনুযায়ী, তা আরও তিন বছর বেড়ে হতে চলেছে সর্বাধিক পাঁচ বছর। ঠিক হয়েছে, ২ বছর শেষ হওয়ার পর কোনও অধিকার্তার মেয়াদ এক বছর করে বাড়ানো হবে। আর তা নিয়ে আগে থেকেই আপত্তি জানাচ্ছিল বিরোধীরা।
এ দিন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে বলেন, ‘আদালত বলেছে সিবিআই খাঁচার তোতায় পরিণত হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই বিল গণতন্ত্রের বিরোধী, সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিরোধীদের হেনস্থা করার জন্য।
একই ইস্যুতে কথা বলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। এই বিলের বিরোধিতা করে তিনি দাবি করেছেন, এই বিলের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কোনও ভূমিকা রইল না। অধীরের কথায়, কেন্দ্র দাবি করছে, সিবিআই বা ইডির ডিরেক্টর হওয়ার জন্য আর কোনও আধিকারিকই নেই। কংগ্রেস নেতার দাবি, সরকার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করছে। যে অফিসার সরকারের কথা শুনে কাজ করবে, তাঁকে রাখছে কেন্দ্র।
বিরোধীদের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, ‘বারবার সিবিআই-কে খাঁচার তোতার বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু, ভুলে গেলে চলবে না যে এই কথাটা ইউপিএ আমলে বলা হয়েছিল।’ ২০১৪ থেকে সে পরিস্থিতি আর নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি এই জানান যে, মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে, তার থেকে বেশি নয়।
এ দিকে এ দিন কেন্দ্র বিরোধী ইস্যু তুলে ধরেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। এয়ার ইন্ডিয়ার কথা উল্লেখ করে তাঁর দাবি, কেন সরকার লাভজনক সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে। সরকারের উচিৎ অ-লাভজনক সংস্থায় বিনিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া।
এতদিন পর্যন্ত এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধিকর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ ছিল ২ বছর। এখন থেকে তা আরও তিন বছর বাড়ানো হচ্ছে। এখন থেকে সর্বাধিক পাঁচ বছর সিবিআই ও ইডির অধিকর্তার পদে বহাল থাকতে পারবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ইতিমধ্যেই ওই দুই অর্ডিন্যান্সে সই করে দিয়েছেন। সিবিআই এবং ইডির প্রধানদের কার্যকালের দুই বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রতি বছর তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত এই মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের প্রধান পদে রয়েছেন এস কে মিশ্র। ২০১৮ সালে তাঁকে ইডি অধিকর্তার পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলাও গড়িয়েছিল। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এল এন রাওয়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ এই প্রসঙ্গে জানিয়েছিল, কেবল মাত্র বিরল এবং ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রেই মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন : হিন্দিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিতে উদ্য়োগী ভারত, জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী