নয়াদিল্লি: চারদিন পর বাংলার ৬ বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন। আর আগে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। শনিবার তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের অফিসে যান। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনের কোনও সদস্য এদিন অফিসে ছিলেন না। ফলে নিজেদের অভিযোগ নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বেরিয়ে আসেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। আগে থেকে জানানো সত্ত্বেও কমিশনের কোনও সদস্য না থাকায় ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।
তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, কীর্তি আজাদ, সুস্মিতা দেব এবং সাকেত গোখলে। নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গতকালই আমরা সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু, দ্বিতীয় শনিবার বলে কোনও অফিসার উপস্থিত ছিলেন না। দেশে যখন নির্বাচন চলছে, তখন এই ছবি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। একজন ক্লার্কের কাছে আমাদের ডেপুটেশন জমা দিয়ে আসতে হয়েছে।” তিনি জানান, মূলত দুটি অভিযোগ নিয়ে এদিন তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
কী কী সেই অভিযোগ?
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষে এলাকার ভাষা বোঝা, এলাকা চেনা সম্ভব হয় না। নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের থাকার কথা। কিন্তু, এবার রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার বিষয়টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। আবার বিজেপির স্থানীয় নেতারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে গিয়েছেন। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা চাই, নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিক যে নিয়ম-নীতি মেনে যেন চলে কেন্দ্রীয় বাহিনী।”
তৃণমূলের দ্বিতীয় অভিযোগ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পুলিশকে অশোক স্তম্ভ সরিয়ে হাওয়াই চটির প্রতীক লাগানোর কথা বলেছেন তিনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এই মন্তব্য করে অশোক স্তম্ভকে অপমান করা হয়েছে। সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে কমিশনকে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। একইসঙ্গে তাঁরা চান, প্রধানমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে ডেকে পদত্যাগ করতে বলুন।
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করে। কেন্দ্রীয় বাহিনী পক্ষপাতিত্ব করছে, এমন কোনও অভিযোগ আসেনি।” আর তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “চোরের মায়ের বড় গলা। তৃণমূলের নেতারা বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করে সভা করেন। আমি তো কিছুই বলিনি। আমি এখনও বলছি, যেসব পুলিশ অফিসার জনগণের টাকা নিয়ে একটি বিশেষ দলের দালালি করে, তাঁদের অশোক স্তম্ভ রাখার নৈতিক অধিকার নেই। অশোক স্তম্ভ রাখতে গেলে নিরপেক্ষ হতে হয়।”
এরপরই তিনি বলেন, “সুকান্ত মজুমদার ওদের অভিযোগে ভয় পায় না। আমি নিজের পথে চলছি। আগামিদিনেও চলব।” তৃণমূল তাঁর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে শুনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মামার বাড়ির আবদার তো।”