নয়া দিল্লি: দেশের আভ্যন্তরীণ একাধিক ইস্যুতে বিরোধিতা থাকলেও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রের পাশে থাকারই বার্তা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তান ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একটি সর্বদল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। কেন্দ্রের তরফে সেই বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সর্বদল বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অংশ নিয়েছিলেন সাংসদ সৌগত রায় ও সুখেন্দুশেখর রায়। বৈঠকের পর দু’জনেই একটা বিষয় স্পষ্ট করে দেন। তা হল- এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নীতিকেই সমর্থন করছে তৃণমূল।
রাজধানীতে সর্বদল বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন সৌগত-সুখেন্দুরা। সেখানে তাঁদের বলতে শোনা যায়, আফগানিস্তান ইস্যুতে কেন্দ্রের নীতিকেই সমর্থন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর পাশাপাশি আজকের বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে একটি তালিকা তুলে দেওয়া হয়। যেখানে আফগানিস্তানে আটকে পড়া বাঙালি তথা রাজ্যবাসীদের নাম ছিল। সূত্রের খবর, তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য এ দিন সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে বাংলার শাসকদল। উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে আফগানিস্তানে ভারত সরকারের বিনিয়োগ নিয়েও।
বিগত কয়েক বছর ধরেই নানা প্রকল্পে আফগানিস্তানে কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ভারত সরকার। কিন্তু সে দেশের ক্ষমতায় তালিবান চলে আসায় সেই প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে আফগান ভূমিতে হওয়া সেই বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সৌগত রায় বৈঠক শেষে জানান, “সমস্ত দলগুলিকে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদ তথ্য দিয়েছে কেন্দ্র। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি অনেকটাই উদ্বেগজনক। আটকে থাকা সকল ভারতীয়কে দেশে ফেরানোই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য। বিরোধীদের পক্ষ থেকে সেই উদ্যোগকে পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়েছে। আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে ভারত। ভবিষ্যতে কী করা হবে তা নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে সরকার।”
সূত্রের খবর, আফগানিস্তানের কোনও হিন্দু বা শিখ যদি ভারতে এসে নাগরিকত্ব নিতে চান, সেক্ষেত্রে সিএএ কী ভাবে কার্যকর হবে সেই নিয়ে বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন জনৈক কোনও এক মন্ত্রী। কিন্তু বিদেশমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তখন জানানো হয়, এই বৈঠকে আলোচনা করার বিষয় বা সময় এটা নয়।
বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আপাতত আটকে থাকা ভারতীয়দের ফেরানোর উপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। যাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে তাঁদের প্রত্যেককে ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টিও সরকারের তরফে নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে তালিবানকে নিয়ে ভারত কী অবস্থান নেবে সেটা এখনও খোলসা করেননি জয়শঙ্কর। নয়া দিল্লির অবস্থান জানতে গেলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তার আগে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনাই মুখ্য বলে তিনি জানিয়েছেন। আরও পড়ুন: ‘কথা রাখেনি তালিবান’, আফগান পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জানাল কেন্দ্র