কোহিমা: নাগাল্যান্ডের (Nagaland) মন জেলায় সেনা বাহিনীর গুলিতে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন সময় কেটে গিয়েছে। তবে সাধারণ গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তর পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যের উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন সংগঠন বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই মৃত্যুর বিচার চেয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এবার তাদের তরফেই সরকারকে চরম সময়সীমা দেওয়া হল। সংগঠনগুলির তরফে সরকারকে ১০ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
বিভিন্ন কোন্যাক উপজাতি ইউনিয়নের প্রধান সংগঠন কোন্যাক ন্যুপুহ শেকো খং এবং কোন্যাক স্টুডেন্টস ইউনিয়ন শুক্রবার বৈঠকে বসেছিল। নাগাল্যান্ডের সেনা অভিযানে হত্যাকান্ড নিয়ে রাজ্য সরকারের তৈরি করা স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিমের রিপোর্ট জমা পড়তে দেরি হওয়ায় তীব্র নিন্দা করেছে ওই সংগঠনগুলি। সংগঠনগুলির তরফে স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের ১৪ তারিখ থেকে সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে যে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছিল, হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়া অবধি সেই আন্দোলন চলবে। সংগঠনগুলির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “৩০ দিনের যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল, জানুয়ারি ১৫ থেকে তা আরও ১০ দিন বৃদ্ধি করা হল। এই সময়সীমায় দাবি মেনে নেওয়া না হলে পূর্ব নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশনের অনুমোদন অনুযায়ী সমস্ত উপজাতি তাদের এক্তিয়ারে মধ্যেই সমস্ত জাতীয় অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকবে।”
মন, তুয়েনসাং, লংলেং, কিফিরে এবং নকলাকের মতো পাঁচটি জেলায় পূর্ব নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন, ৬ টি নাগা সংগঠনের প্রধান সংগঠন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকারকে চরম সময় দিল কোন্যাক সংগঠনগুলি। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ৩০ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল এবং এখনও সেই সময়সীমা আরও ১০ দিন বৃদ্ধি করা হল।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বর মাসের ৪ ও ৫ তারিখ নাগাল্যান্ডের মন জেলায় লুকিয়ে থাকা জঙ্গি সন্দেহে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে সেনা বাহিনীর ২১ প্যারা এফ ইউনিট। গোয়েন্দা সূত্রে সেনার কাছে খবর ছিল ওই এলাকায় কিছু জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে। এই হত্যাকান্ডের পর সেনাবাহিনীর তরফে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছিল এবং একজন মেজর জেনারেলের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছিল।
তবে নাগাল্যান্ড বাসীদের পক্ষ থেকে অনেকেরই সন্দেহ ছিল আফস্পা আইনের দোহাই দেখিয়ে ঘটনায় জড়িত সেনাদের কোনও শাস্তিই হবে না। চলতি সপ্তাহেই সেনা প্রধান এমএম নারভানে জানিয়েছিলেন এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে নির্দিষ্ট কোনও পদক্ষেপের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। মন জেলায় কোন্যাক উপজাতির প্রধান সংগঠন কোন্যাক ইউনিয়ন সেনা ও সিটের রিপোর্ট তাদের কাছে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। আগামী দিনে নাগাল্যান্ড পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেদিকে নজর থাকবে সকলের।