আগরতলা: এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর গড়ে বিজেপিতে ভাঙন ধরাতে সক্ষম হল তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই প্রায় ৭০০ জন বিজেপি নেতা কর্মী তৃণমূলে যোগদান করেছেন। সূত্রের খবর, সোমবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপির ৬৬৯ জন নেতা, কর্মী ও সমর্থক। এই যোগদান পর্ব ঘিরে উচ্ছ্বসিত ঘাসফুল শিবির।
ত্রিপুরার প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিকের বাসভবনে তৃণমূলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এই যোগদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসেই বিজেপি থেকে পুরনায় তৃণমূলে ফিরে এসেছেন সুবলবাবু। তারপর থেকে রোজই কেউ না কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়ে চলেছেন। তবে আজকের যোগদান পর্বকে আলাদা গুরুত্বের চোখে দেখা হচ্ছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের শক্ত গড় হিসেবে পরিচিত বনমালীপুর বিধানসভার নয় নম্বর মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি নান্টু সাহার নেতৃত্বে সোমবার এই যোগদান হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই যোগদানকে নিজেদের বড় জয় হিসেবেই দেখছে। বিজেপি যদিও এতে খুব একটা বিচলিত নয়।
গেরুয়া নেতৃত্বের বক্তব্য, আগে যে বিরোধী শিবিরে শুধুমাত্র বামেরাই ছিল, সেই বিরোধী শিবির যদি ভাগ হয়ে তার কিছুটা অংশ তৃণমূলে চলে যায়, তবে এতে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না। তৃণমূল এই ধরনের যতই যোগদান শিবির করিয়ে নিক না কেন, এই নিয়ে তারা বেশি মাথা ঘামাতে রাজি নয়। কারণ ত্রিপুরা বিজেপির অন্দরে বাড়তে থাকা অসন্তুোষ খুব একটা শান্তিতে রাখেনি রাজ্য বিজেপিকে। আর সেই কারণে অন্তরের মনোমানিল্য মেটানোর দিকেই এখন বেশি নজর নেতৃত্বের। গোটা বিষয়টির উপর নজরদারি চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় বিজেপির পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষকও নিয়োগ করা হয়েছে, যারা ত্রিপুরায় বিজেপির খুঁটিনাটি বিষয়গুলির উপর নজর রাখছেন।
বিজেপি শিবির মনে করছে, এখনও তাদের মূল লড়াই সিপিএমের বিরুদ্ধেই। ত্রিপুরায় তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি এখনও ততটাও শক্ত হয়নি যে ঘাসফুল শিবিরকে নিয়ে আলাদা কোনও রণকৌশল ঠিক করতে হবে গেরুয়াদের। সোমবারের অনুষ্ঠান কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের পাশাপাশি সুজাতা খাঁ মণ্ডলও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন গতবার ত্রিপুরায় গিয়ে আক্রান্ত হওয়া তৃণমূল নেত্রী জয়া দত্তও।
অন্যদিকে, যে নান্টু সাহা এ দিন তৃণমূলে যোগদান করেছেন, তিনি ত্রিপুরায় আদি বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী তথা নেতা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। কয়েক দশক ধরেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির উজ্জ্বল ফলাফলের পিছনেও তাঁর বড় ভূমিকা ছিল বলে জানাচ্ছে ত্রিপুরার স্থানীয় রাজনৈতিক সচেতকরা। এই দলবদলের ফলে আগামী দিনে তৃণমূলের প্রভাব বা ক্ষমতা ত্রিপুরার রাজনীতিতে কতটা বৃদ্ধি পাবে, তা অবশ্য সময়ই বলবে। আরও পড়ুন: জেলায় জেলায় তত্পর সিবিআই, কেন নিস্পৃহ সিট? ফের হাইকোর্টে মামলা?