ত্রিপুরা: শনিবার ফের ত্রিপুরায় গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূল নেতা সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত ও দেবাংশু ভট্টাচার্য। ঘটনায় সুদীপ রাহার মাথা ফেটে গিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, বিজেপির লোকজনই তাঁদের লক্ষ্য করে ইঁট ছোড়ে। আর তাতেই আক্রান্ত হয়েছেন তরুণ নেতারা। এই ঘটনার পরই তড়িঘড়ি ত্রিপুরা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। রবিবারই ত্রিপুরা যাচ্ছেন ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ। আর এই আক্রমণের ঘটনায় বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে তীব্র সমালোচনা করল সিপিএম।
শনিবার ত্রিপুরা সিপিএমের তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আচরণ ফ্যাসিস্ট-সুলভ। ছত্রেছত্রে বিজেপির নিন্দা করেছে মানিক সরকারদের দল। লেখা হয়েছে, “আমবাসা মহকুমা ও ধর্মনগর শহরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ওপর রাজ্যের শাসক দল বিজেপি দুর্বৃত্ত বাহিনীর ফ্যাসিস্ট সুলভ আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছে ত্রিপুরা সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী।”
একই সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, ভারতের সংবিধান অধিকার অনুযায়ী স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সংগঠনের অধিকার যে খর্ব হয়েছে বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরায় তা আরও একবার দেশের সামনে উন্মোচিত হল। এই ফ্যাসিস্ট-সুলভ আক্রমণের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষদের প্রতিবাদ করতে আহ্বান জানিয়েছে ত্রিপুরা সিপিএম।
যদিও এদিনের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। তারা দাবি করেছে তৃণমূলই অশান্তি ছড়াচ্ছে ত্রিপুরায়। এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার তৃণমূল ‘নাটক’ করছে বলে কটাক্ষ করেছেন। এদিকে শনিবার রাতে আগরতলা ফেরার পথে ফের তৃণমূলের তিন যুব-ছাত্র নেতা আক্রান্ত হয়েছন বলে অভিযোগ। এবার ঘটনাস্থল খোয়াই। সেখানে তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে বাঁশ, ইঁট ও পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
জয়া-সুদীপদের ভাঙা গাড়ি দেখে বিজেপি’র ‘গুন্ডা’ বাহিনী আক্রমণ করে বলে অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের। এর পর আক্রান্ত তৃণমূল নেতারা বাইজলবারি থানায় যান। অভিযোগ, থানার বাইরেও প্রায় দেড়শোর বেশি লোক বসে রয়েছে। তাদের অনেকের হাতে বাঁশ, ধারালো অস্ত্র রয়েছে! তবে রাতের ঘটনা দুপুরের তুলনায় কিছুটা ছোট বলে সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, এদিনের ঘটনায় ত্রিপুরার সিপিএম যখন সে রাজ্যে তাঁদের সম্ভাব্য রাজনৈতিক নয়া প্রতিদ্বন্দ্বীর ওপর হামলার ঘটনায় শাসক দলকে নিশানা করেছে, তখন এ রাজ্যের সিপিএমের ভূমিকা কিছুটা অন্যরকম। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “যে কোনও মানুষের রাজননীতি করার অধিকার আছে। তাঁরা রাজনীতি করতে গেলেই বিরোধী পক্ষ বলে আক্রমণ করতে হবে! আপাতত পছন্দ হচ্ছে না, পরে তো পছন্দ হতে পারে।” এর পরেই তাঁর টিপ্পনী, “তৃণমূল বিজেপির কাছে শিক্ষা নিচ্ছে, নাকি বিজেপি তৃণমূলের কাছে শিক্ষা নিচ্ছে?” তিনি আরও যোগ করেন, এ রাজ্যে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর হিম্মত সবার হয় না। বাংলায় তৃণমূল হোক বা উত্তর প্রদেশে বিজেপি, সবসময়ই আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে তাঁরা বলে মন্তব্য করেন সুজনবাবু। আরও পড়ুন: মাথা ফাটল সুদীপের, ত্রিপুরায় ফের আক্রান্ত তৃণমূল