আগরতলা : সংবাদ মাধ্যমের উপর আক্রমণ অব্যাহত ত্রিপুরায়। এবার শান্তির বাজার। আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস। ত্রিপুরায় খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বার বার আক্রান্ত হতে হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমকে। কিছুদিন আগেই ত্রিপুরায় খবর সংগ্রহ করতে আসা দুই মহিলা সাংবাদিককে অসম থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়েছিল।
সাংবাদিক নিগ্রহের আরও একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে শান্তির বাজার এলাকায়। রাজধানী আগরতলায় পূর্ব থানা চত্বরে পুলিশের সামনে চার সাংবাদিক আক্রান্ত হওয়ার পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার শান্তির বাজার মহকুমার অন্তর্গত বীরচন্দ্রপুর পতিছড়ির মুড়াসিঙে সুজিত ত্রিপুরা নামে ওই সাংবাদিক আক্রান্ত হন।
সেদিন সেখানে ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের উদ্যোগে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেলার উদ্বোধনের খবর সংগ্রহ করে ফিরে আসার পথে দুষ্কৃতীরা সুজিত ত্রিপুরার উপর চড়াও হয়েছিল। সুজিত ত্রিপুরা স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত। ইতিমধ্যেই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বীরচন্দ্র মনু-র মন পাথর পুলিশ আউটপোস্টে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই হামলার তদন্ত প্রক্রিয়ার খোঁজখবর নিতে আজ মন পাথর আউটপোস্টে যান সাংবাদিকদের এক প্রতিনিধি দল। শান্তির বাজার থানার ওসি সুব্রত চক্রবর্তীর সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি জানানো হয়েছে।
শান্তিরবাজার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক জানিয়েছেন, আসন্ন পুর ও নগর নির্বাচনের জন্য তাঁরা ব্যস্ত। নির্বাচনের পর দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং গ্রেফতার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ত্রিপুরার খবর সংগ্রহ করতে করে গ্রেফতার হয়েছিলেন দুই মহিলা সাংবাদিক। ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সমর্থক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। অভিযোগকারী কাঞ্চন দাসের বক্তব্য, ওই দুই সাংবাদিক বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে যুক্ত ছিল এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারা উনাকোটি জেলার পালবাজারে গত ১৩ নভেম্বর কয়েকজন মুসলিম পরিবারের সঙ্গে দেখা করে। সেখানেই তারা হিন্দু সম্প্রদায় ও ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ ধারা এবং ১২০ -বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
জানা গিয়েছে, ওই দুই সাংবাদিকের থানায় গিয়ে ত্রিপুরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করে তদন্তে সহযোগিতা করার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশের দাবি, তাঁরা ত্রিপুরা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই কারণেই ত্রিপুরা পুলিশের তরফে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তারপর তাঁদের আটক করা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় সাম্প্রতিক যে হিংসার খবর ছড়িয়েছিল, সেই সংক্রান্ত খবর সংগ্রহ করছিলেন তাঁরা। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হিংসার অভিযোগ ভুয়ো। অভিযোগকারী কাঞ্চন দাসের বক্তব্য, ওই দুই সাংবাদিক বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বৈরিতা ছড়ানোর কাজে যুক্ত ছিল এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল।