আগরতলা : ২০২১ সাল। অক্টোবর মাস। ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতে ত্রিপুরা থেকে কালীঘাটে এসে মুণ্ডন করিয়েছিলেন সুরমা বিধানসভার বিধায়ক আশিস দাস। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছরও সংসার করতে পারলেন না তৃণমূলের সঙ্গে। সাত মাস যেতে না যেতেই তৃণমূল ছাড়লেন ত্রিপুরার নেতা আশিস দাস। আসন্ন সুরমা বিধানসভা উপনির্বাচনে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়তে পারেন বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন হঠাৎ এই মোহভঙ্গ? সেই কথাও জানিয়েছেন নিজেই। তাঁর কথায়, তৃণমূলের কোনও ভবিষ্যৎ নেই পড়শি রাজ্যে। বলেন,”তৃণমূল কংগ্রেস কেন করব? কার জন্য করব? যার কোনও ভবিষ্যৎ নেই…. ত্রিপুরার মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। ত্রিপুরাবাসী হিসেবে এই মান অপমান বোধ আমার মধ্যে রয়েছে।”
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন,”৮০ শতাংশ মানুষ তৃণমূলমুখী হয়ে গিয়েছিল। এর জন্য আমিও তৃণমূল কংগ্রেসে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ প্রশ্ন চিহ্ন চলে আসল।” তৃণমূল কংগ্রেসের উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কালীঘাটে গিয়ে মুণ্ডন করা নেতা। তাঁর অভিযোগ, “আমার মতো বিধায়ককে ওরা কাজে লাগাতে পারেনি। ত্রিপুরার মানুষকে ওরা মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। পুতুল নাচের মতো ত্রিপুরার মানুষকে নিয়ে খেলা করছে।” পুরনো কর্মীদের ঠিকঠাক গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ তুলেই মাস সাতেক আগে পদ্ম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আশিস দাস। এখন তৃণমূল কংগ্রেসেও ‘গ্রুপিজ়মের’ অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “পুরনো কর্মীদের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, কয়েকদিন পরেই ত্রিপুরায় চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। আগরতলা টাউন, বড়দোয়ালি, সুরমা ও যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে ২৩ জুন। ২৬ তারিখ ভোট গণনা। তার আগেই তৃণমূল নেতার এই দলত্যাগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আসন্ন উপনির্বাচনে সুরমা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়তে পারেন আশিস দাস, এই নিয়ে ত্রিপুরার রাজনীতিতে চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।