গাজিয়াবাদ: টিকটিকি(Lizard)-র ডাকে ঘুমোতে পারছিল না যমজ দুই ভাই! মা-বাবাকে না ডেকে একাই তাঁরা বারান্দা থেকে টিকটিকি তাড়াতে গিয়েছিল, আর সেখানেই ঘটল বিপত্তি। পা পিছলে ২৫ তলা থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু হল যমজ দুই কিশোরের।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজিয়াবাদ(Ghaziabad)-র সিদ্ধার্থ বিহার এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অঞ্চলেরই একটি বহুতলে মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করত দুই যমজ ভাই সূর্য নারায়ণ ও সত্য নারায়ণ। নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছিল তাঁরা। শনিবার মধ্যরাতে টিকটিকি তাড়াতে গিয়েই এই বিপত্তি ঘটে।
জানা গিয়েছে, রাত ১টা নাগাদ দুই ভাই চুপিচুপি বারান্দায় এসেছিল। সেখানেই একটি টিকটিকিকে তাড়াতে গিয়ে টেবিলের উপরে চেয়ার রেখে, তার উপরে ওঠে তারা। কিন্তু কোনওভাবে চেয়ার থেকেই পিছলে সোজা বারান্দা থেকে নিচে পড়ে যায় তাঁরা।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক জেরায় ওই দুই কিশোরের মা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি ও তাঁর মেয়ে পাশের একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁর স্বামী অফিসের কাজে মুম্বই গিয়েছিলেন। যমজ দুই ভাই একই ঘরে থাকত। তাঁরা প্রায় সময়ই বারান্দা থেকে টিকটিকি তাড়ানোর চেষ্টা করত বলেও জানিয়েছে তাদের মা। শনিবার রাতেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সার্কেল অফিসার মহিপাল সিং বলেন, “যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে, তখন তাদের মা ও বোন অন্য একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। ঘটনাক্রম এখনও সম্পূর্ণরূপে সাজানো না হলেও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ওই বারান্দায় বেশ কয়েকটি টিকটিকি ছিল। দুই ভাই প্রায়সময়ই সেই টিকটিকি তাড়ানোর চেষ্টা করত। শনিবার রাতেও হয়তো একই ঘটনা ঘটেছিল।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারান্দায় একটি টেবিল ও চেয়ারও পাওয়া গিয়েছে। দুই কিশোরের মা-বাবার ধারণা, তারা মধ্যরাতে বারান্দায় এসেছিল টিকটিকি তাড়াতেই। কিন্তু নাগাল না পাওয়ায় টেবিলের উপরে চেয়ার তোলে এবং তার উপর ওঠার চেষ্টা করে। সেই সময়ই তারা কোনওভাবে পিছলে নিচে পড়ে যায়।
গাজিয়াবাদের সিদ্ধার্থ বিহার এলাকার প্রতীক গ্রাণ্ড সিটিতে প্রায় ৪ হাজার ফ্ল্যাট রয়েছে। এক একটি বিল্ডিং ২৬ থেকে ২৯ তলা উঁচু। এইরকমই একটি বিল্ডিংয়ের ২৫ তলায় থাকত ওই পরিবার। রাতে নিরাপত্তা রক্ষী জোরে কিছু শব্দ শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তাঁর চিৎকারেই বাকিরা বেরিয়ে আসেন। দেখা যায়, কয়েক ফুটের দূরত্বেই পড়ে রয়েছে দুই ভাইয়ের রক্তাক্ত দেহ। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করে।
আবাসনের এক নিরাপত্তারক্ষী জানিয়েছেন, তিনি গেটের কাছে বসেছিলেন, আচমকাই ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান। প্রথমে ভেবেছিলেন, কোনও গাড়ির হয়তো ধাক্কা লেগেছে। পরে আবাসনের পিছন দিকে যেতেই ঘাসের উপর দুই ভাইয়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই রবিবার ভোরে গাজিয়াবাদে ফিরে আসেন দুই কিশোরের বাবাও। ময়নাতদন্তের পর রবিবারই তাদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায়, গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: Children Death: ২৪ ঘণ্টাতেই মৃত্যু ৪ নবজাতকের, অভিভাবকদের বিক্ষোভে জরুরি বৈঠকের ডাক প্রশাসনের