বেঙ্গালুরু: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলা সহকর্মীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়ে নীতি পুলিশির শিকার ভিন ধর্মের যুবক। ভিন্নধর্মী যুবতীকে বাইকে চাপানোর ‘অপরাধে’ ওই যুবককে ব্যাপক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর ডেয়ারি সার্কেল এলাকায়।
এই নীতি পুলিশির একটি ভিডিয়ো দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই আসরে নামে পুলিশ। শনিবার এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু সিটি পুলিসের এসজি পালা থানা। এদিকে, পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে প্রশংসা করেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোমাই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত যুবক পেশায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। শুক্রবার তারই এক মহিলা সহকর্মীকে নিজের বাইকে চাপিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছিলেন তিনি। ডেয়ারি সার্কেলের কাছে তাঁদের গাড়িটি আসতেই হঠাত্ পথ আটকায় দুই যুবক। অভিযোগ, দুই অভিযুক্ত দুই যুবক তাদের একসঙ্গে কেন যাচ্ছেন তা জিজ্ঞোসা করেন। তার উত্তর পাওয়ার পরই বাইকে সওয়ার যুবতিকে লক্ষ করে তারা প্রশ্ন করে ভিন্নধর্মের যুবকের বাইকে কেন তিনি চেপেছেন। কিন্তু ওই যুবতী তার কারণ ব্যাখ্যার চেষ্টা করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি অভিযুক্তরা। পাল্টা মারধর করা হয় বাইক চালক যুবককে। এরপর অভিযুক্তরা সরাসরি যুবতীকে নাম জিজ্ঞাসা করেন এবং হিন্দু যুবকের বাইকে সওয়ার হওয়ায় কেন তিনি লজ্জিত নন তা নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেন। ভিন্নধর্মের যুবকের বাইকে চাপাকে তারা কার্যত পশুপাখির আচরণের সঙ্গেও তুলনা করে। তবে এখানেই থেমে থাকেনি তাদের নীতি পুলিশি। যুবতীর থেকে তাঁর স্বামীর মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোনও করে অভিযুক্ত দুইজন। ভিন্ন ধর্মের যুবকের সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে কেন তিনি যাতায়াত করার অনুমতি দিচ্ছেন তা জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি এহেন সিদ্ধান্তের জন্য সমাজ কলুষিত হচ্ছে বলেও তোপ দাগে তাদের মধ্যেই এক যুবক।
অন্যদিকে, বেশ কিছুক্ষণ ব্যাঙ্ককর্মী যুবককে চড়, ঘুঁসি মারার মত ঘটনা চলে। তীর্যক মন্তব্যও করা হয়। পরে ওই যুবতীকে তাঁর সহকর্মীর বাইক থেকে জোর করে নামিয়ে অটোতে বাড়ি ফিরতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ। এদিকে, হেনস্থার সমগ্র ঘটনাটি ক্যামেরা বন্দি করে অভিযুক্তরা। পরে সেই ভিডিয়ো ‘ন্যাশানাল ডিফেন্স ফোর্স’ ওয়াটার মার্ক দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়াও হয়। নীতি পুলিশির ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রচুর শেয়ার হয় একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই এসজি পালা থানায় এর বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে বেঙ্গালুরু পুলিশ। ঘটনার পর মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যে অর্থাত্ শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় দুই অভিযুক্ত যুবকেই। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিসের দ্রুত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোমাই। সেই সঙ্গে প্রশংসাও করেছেন বেঙ্গালুরু পুলিশের।
আরও পড়ুন: Rain Update: দুর্যোগের বলি ১৪, ত্রাণশিবিরে ৮০ হাজার, জলের ঘেরাটোপে বন্দি ১৩ লক্ষ বঙ্গবাসী!