লন্ডন: কোভিশিল্ড(Covishield)-র স্বীকৃতি নিয়ে ঝামেলা মিটতে না মিটতেই এ বার সমস্যা শুরু ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট (Vaccine Certificate) নিয়ে। ভারতীয় যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন(Quarantine)-র নিয়মে বেঁধে রাখতে বুধবারই ব্রিটেন(Britain)-র তরফে জানানো হয়েছিল, করোনা টিকা নয়, টিকা সার্টিফিকেটে সমস্যা রয়েছে। এ বার ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হল, সমস্ত দেশের করোনা টিকার সার্টিফিকেটই ন্যূনতম কিছু মানদণ্ড (Minimum Criteria) পার করতে হবে। টিকা সার্টিফিকেট নিয়ে ভারতের সঙ্গে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের নিয়ম মেনে সমাধানের পথে ধাপে ধাপে এগোনো হচ্ছে।
বুধবারই দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ব্রিটেন তাদের ভ্রমণ নির্দেশিকায় সেরাম সংস্থা(Serum Institute of India)-র তৈরি কোভিশিল্ডকে করোনা টিকা হিসাবে মান্যতা দেয়। আগে ব্রিটেনে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনকে মান্যতা দেওয়া হলেও একই ফর্মুলায় ভারতে তৈরি কোভশিল্ডকে ভ্যাকসিন হিসাবে ধরা হচ্ছিল না। ব্রিটেনের ভ্রমণবিধির নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, কোভিশিল্ড প্রাপকদের টিকা প্রাপ্ত বলে গণ্য করা হবে না। সেই কারণে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ় নেওয়া থাকলেও ভারত থেকে আগত সমস্ত যাত্রীদেরই ১০ দিন বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
গতকালই ব্রিটেন স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হল জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা। বিদেশী পর্য়টকদের জন্য ব্রিটেনের দরজা খুলে দেওয়া হলেও , সুরক্ষাবিধি মেনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই প্রতিটি দেশের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেটকে ন্যূনতম কিছু মাণদণ্ড পার করতে হবে সেটিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য। আমরা এই লক্ষ্যে ভারত সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সদস্যদের সঙ্গে কাজ করে যাব।”
বুধবার রাতে ব্রিটেন সরকারের তরফে জানানো হয়, নতুন তালিকায় যে সমস্ত দেশগুলির নাম যুক্ত হয়েছে বা পরিবর্তন হয়েছে, তাদের আপাতত বিবেচনার তালিকাতেই রাখা হচ্ছে। তবে কী কী শর্ত পূরণ করলে ভারতের টিকা সার্টিফিকেটকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।
ব্রিটিশ সরকারের স্বীকৃত তালিকায় ভারতের মতো যে দেশগুসি এখনও জায়গা পায়নি, সে দেশগুলির পর্যটকদের ব্রিটেনে যাওয়ার জন্য ভ্রমণের আগেই একটি আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে। ব্রিটেনে পৌঁছনোর পর বাধ্যতামূলকভাবে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে। কোয়ারেন্টাইনের দ্বিতীয় ও অষ্টম দিনেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে এবং সেই যাত্রীকেই ওই খরচ বহন করতে হবে। পাঁচদিনের মধ্যে যদি করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো যায়, তবে “টেস্ট টু রিলিজে”র সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।
এতদিন ব্রিটেনে যাতায়াতের জন্য লাল, অ্যাম্বার ও সবুজ তালিকা ছিল। লাল তালিকাভুক্ত দেশগুলির যাত্রীদের যেমন ব্রিটেনে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা ছিল, তেমনই সবুজ তালিকাভুক্ত দেশগুলির যাত্রীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন বা অন্য কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। অ্যাম্বার তালিকাভুক্ত দেশগুলির যাত্রীদের বিশেষ কিছু শর্ত পূরণ করলে, তবেই প্রবেশের অধিকার মিলত। এতদিন অবধি ভারত অ্যাম্বার তালিকাভুক্তই ছিল। তবে আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ব্রিটেনে সরকারিভাবে এই নিয়ম তুলে দেওয়া হচ্ছে।
কোভিশিল্ডকে ভ্যাকসিন হিসবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও টিকা সার্টিফিকেট নিয়ে ব্রিটেন সরকারের আপত্তি থাকায় ভারতীয়দের খুব একটা লাভ হবে না, তাদের ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনের নিয়মই পালন করতে হবে।