নয়া দিল্লি: নতুন রাষ্ট্রপতি পেতে চলেছে দেশ। সোমবারই সাঙ্গ হয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব। দিল্লির সংসদে ও সমস্ত রাজ্যের বিধানসভাগুলিতে ভোট দিতে আসেন সাংসদ-বিধায়করা। তবে সংসদ ভবনে ভোট দিতে এসে নজর কাড়েন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও শক্তি মন্ত্রী। দুজনকেই দেখা যায় পিপিই কিট পরে এসেছেন। হঠাৎ এই বেশভূষার কারণ জানতে গেলেই জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও শক্তি মন্ত্রী আর কে সিং। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রতিটা ভোটই গুরুত্বপূর্ণ, সেই কারণেই দিনের শেষভাগে তাঁরা যাবতীয় সুরক্ষাবিধি অনুসরণ করেই ভোট দিতে আসেন।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এনডিএ মনোনীত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু ও বিরোধী দলগুলির মনোনীত প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে ভোট দিতে হাজির হন সাংসদ ও বিধায়করা। তারই মাঝে কিছু সাংসদ-বিধায়করা নজর কেড়েছেন তাঁদের দায়িত্ববোধ ও সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে রেখে ভোট দিতে আসার জন্য। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তা জানতেন না অধিকাংশই। ভোট চলাকালীনই পিপিই কিট পরে তিনি আসেন, ব্যালট বক্সে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে ছোঁয়া এড়িয়েই তিনি নিজের ভোটপত্র ঢুকিয়ে দিয়ে চলে যান। তার কিছুক্ষণ পরই একইভাবে পিপিই কিট পরে ভোট দেন কেন্দ্রীয় শক্তিমন্ত্রী আর কে সিং।
তবে একা নির্মলা সীতারামন বা আর কে সিং নন, করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও ভোট দিয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন এআইএডিএমকে নেতা ও পনিরসেলভমও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনিও চেন্নাই বিধানসভায় পিপিই কিট পরে ভোট দিতে আসেন। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্য়ালিনও সম্প্রতিই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গতকাল তাঁকেও ভোট দিতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে, গতকালই হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সময় নষ্ট না করে তিনি হাসপাতাল থেকেই সোজা বিধানসভায় আসেন এবং ভোট দেন।
করোনা আক্রান্ত না হলেও, গুরুতর অসুস্থ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ মনমোহন সিং। বর্ষীয়ান ওই নেতাকে গত বছরের শেষভাগ থেকেই সংসদে দেখা না গেলেও, গতকাল তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে আসেন। শরীরে হাঁটাচলার মতো ক্ষমতা বা জোর না থাকায়, হুইলচেয়ারে বসেই ভোট দিতে আসেন তিনি। নিরাপত্তারক্ষীদের সাহায্য নিয়ে কোনওমতে উঠে দাঁড়িয়ে তিনি ভোট দেন। একই অবস্থায় আসেন উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা তথা অখিলেশ যাদবের বাবা মুলায়ম সিং যাদবও। তিনি প্রথমে ভোট দিতে পারেননি। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে আরেকবার ভোট দিতে দেওয়া হয়। বিহারের এক বিজেপি বিধায়কও ভোট দিতে এসেছিলেন স্ট্রেচারে শুয়ে। গতমাসেই তিনি দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন। আপাতত হাঁটাচলা সম্পূর্ণ বন্ধ তাঁর, তবুও মনের জোরে ভোট দিতে আসেন তিনি। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ৯৯.১৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।