নয়া দিল্লি : ওমিক্রনের আতঙ্কে গোটা বিশ্ব এখন থরহরিকম্প। সংক্রমণ ঢুকে গিয়েছে ভারতেও। এখনও পর্যন্ত দেশে তিন জনের শরীরে ওমিক্রনের হদিস পাওয়া গিয়েছে। আর এরই মধ্যে পাঁচ রাজ্য এবং এক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে সতর্ক করল কেন্দ্র। ওড়িশা, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, মিজ়োরাম এবং জম্মু ও কাশ্মীরকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ আজ ওই রাজ্যগুলি এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পাঠানো চিঠিতে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের উপর নজরদারি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত দেশগুলি থেকে আগত বিমানযাত্রীদের উপর নতুন বিধির কড়াকড়ি অবশ্যই যেন মেনে চলা হয়, সেই কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, যে সব এলাকা থেকে বেশি সংক্রমণের হদিস পাওয়া যাচ্ছে, সেই হটস্পটগুলিকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, করোনা রোগীদের শরীর থেকে প্রাপ্ত সব সোয়াবের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্যও পাঠাতে বলা হয়েছে।
তালিকায় সবথেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলা। সেখানে নভেম্বরের ২৬ তারিখ থেকে ডিসেম্বরের ২ তারিখের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের হার এক সপ্তাহ আগে যা ছিল, তার তুলনায় ৭২৭ শতাংশ বেড়েছে। ওই একই সময়ের মধ্যে কর্নাটকের তুমকুর জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৫২ শতাংশ। একইরকম উদ্বেগজনক সংক্রমণ বৃদ্ধি হয়েছে তামিলনাড়ুর তিন জেলাতেও।
পাশাপাশি, মিজোরামের চার জেলাতে সাপ্তাহিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে সাইহা জেলায় সংক্রমণ গ্রাফ এক সপ্তাহের মধ্যে বেড়েছে ২৩৭ শতাংশ। ওড়িশাতেও এমন ভাবেই লাগামছাড়া সংক্রমণ দেখা দিয়েছে ৬ জেলায়। তার মধ্যে ৬৬৭ শতাংশ বেড়েছে ধেনকানাল জেলায়। করোনায় মৃত্যুর হারও বেড়েছে কেরলে। ১৯ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে থিসুর জেলায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আর ঠিক তার পরের সপ্তাহেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৮। মালাপ্পুরম জেলায় পরিসংখ্যান এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৯।
দক্ষিণ আফ্রিকায় কোভিডের এই নতুন সংস্করণের প্রথম শনাক্ত করেন চিকিৎসক অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি। সম্প্রতিই তিনি দেশে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রকাশ পাওয়া লক্ষণগুলির ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন। সর্বভারতীয় এক চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় টিকা নেওয়া এবং না নেওয়া দুই ধরনের মানুষের শরীরেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছে, তবে তার লক্ষণ অতি সামান্যই।
তিনি বলেছেন, ‘সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে এবং পজিটিভিটির হার দাঁড়িয়েছে ১৬.৫ শতাংশে। টিকাকরণ হওয়া, না হওয়া মানুষ এবং শিশুদের মধ্যে এর সামান্য লক্ষণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সম্পূর্ণ টিকাকরণ হওয়া এক ব্যক্তির আবার সংক্রমিত হওয়ার ঘটনাও সামনে এসেছে। ওমিক্রন আক্রান্ত একজন রোগীর ক্লিনিক্যাল ছবি আঁকা ভীষণই মুশকিল। তবে আক্রান্তদের শরীরে লক্ষণগুলি এখনও পর্যন্ত সামান্যই দেখা যাচ্ছে এবং তাদের এখনও অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছে না।’