নয়া দিল্লি: থাকবে না আর রাষ্ট্রদ্রোহ (Sedition)। দেশের আইন ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রদ্রোহকে উৎখাত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রস্তাব করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। শুক্রবার, লোকসভায় দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে তিনটি বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই আইনগুলির ব্যাখ্যার মাঝেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
শুক্রবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেন যে ভারতীয় দণ্ডবিধি সংক্রান্ত একটি নতুন বিল আনা হবে যার সাহায্যে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ সম্পূর্ণভাবে উৎখাত করা হবে। এদিন লোকসভায় ভারতীয় দণ্ডবিধি, ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড ও ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের বদলে তিনটি বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই আইনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ বলেন, “এই আইনের অধীনে আমরা রাষ্ট্রদ্রোহের মতো আইন উৎখাত করা হবে।”
তিনি বলেন,”১৮৬০ থেকে ২০২৩ সাল অবধি দেশের অপরাধমূলক বিচার প্রক্রিয়া ব্রিটিশদের তৈরি আইনের উপরে ভিত্তি করেই হত। এই নতুন তিনটি বিল দেশের বিচারব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আনবে।”
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন নিয়ে বলতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা যে বিল আনতে চলেছি, তাতে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো আইন উৎখাত করা হবে। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এখানে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো আইন থাকতে পারে না।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১২ মে সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনকে স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। যতদিন আইন পুনর্বিবেচনা হচ্ছে না, ততদিন এই আইনে গ্রেফতার করা যাবে না বলেই জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
ভারতের ঔপনিবেশিক শাসন চলাকালীনই চালু করা হয়েছিল রাষ্ট্রদ্রোহ আইন। ১৮৯০ সালে এই আইন ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যোগ করা হয়েছিল সংবিধানের ১২৪ এ ধারা অনুযায়ী। প্রথমে এই আইনে সাজা ছিল, সাগর পাড়ে পাঠিয়ে সাজা দেওয়া। পরে ১৯৫৫ সালে সেই আইন সংশোধন করা হয় এবং যাবজ্জীবন সাজা যোগ করা হয়।
সংবিধানের ১২৪ এ ধারা অনুযায়ী,কোনও ব্যক্তি যদি তার বক্তব্য বা লেখা অথবা অঙ্গভঙ্গি কিংবা আচার ব্যবহারের মাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানো, আইন অমান্য, উসকানিমূলক কাজ করেন বা করার চেষ্টা করেন যা আইন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে, তাহলে তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় অভিযুক্ত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে কারাদণ্ড এবং জরিমানা দুইই হতে পারে।