ভোপাল: যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও, কেবল ভাষার প্রতিবন্ধকতার কারণে সঠিক জায়গায় কাজের সুযোগ পান না অনেকেই। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। এবার এই বিষয় নিয়ে সরব হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “ইংরেজির প্রতি মোহের কারণে দেশবাসীদের প্রতিভার মাত্র ৫ শতাংশ ব্যবহার করছে ভারত। যদি আমরা ভাষার বিভেদ ভুলে সমস্ত ক্ষেত্র থেকে প্রতিভাকে ব্যবহার করি, তবে বিশ্বমঞ্চে ভারত সূর্যের মতো ঝলমল করবে।”
মধ্য প্রদেশে ২০২০ সালের নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়েই ভাষার বিভেদের কারণে কীভাবে অনেক প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায় না, সেই কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলায় কীভাবে জর্জরিত হতে হয়েছিল, সেই উদাহরণও দেন তিনি। অমিত শাহ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অনেক মামলা করেছে কংগ্রেস। আদালতে তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি আমি। সেই সময় আমি অনেক ভাল ভাল আইনজীবীকে দেখেছি, যারা আদালতে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। সেই সময় আমি অনেক বড় বড় আইনজীবীদেরও স্থানীয় আদালতে মামলা লড়তে দেখেছি। আইন সম্পর্কে তাদের জ্ঞান হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের অনেক আইনজীবীদের থেকেও বেশি ছিল। কিন্তু শুধুমাত্র ইংরেজিতে সাবলীল না হওয়ার জন্য তারা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়তে পারেননি। এটা কি তাদের দোষ যে তারা যখন স্কুলে পড়েছেন, তখন ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল ছিল না?”
গুজরাটের রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখার সময়ের কথা উল্লেখ করেও তিনি বলেন, “ওই সময়ে আমি প্রত্যেকদিন চার ঘণ্টা আমি নিজের হিন্দি ঝালিয়ে নিতাম হিন্দি থেকে গুজরাটি অনুবাদের মাধ্য়মে। যখন আমাদের এক নেতা,যিনি আজ আর নেই, এই বিষয়ে জানতে পারেন, তিনি আমায় বলেন যে হিন্দি শুধরানোর বদলে আমায় ইংরেজি শেখার উপরে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। আমি তাঁকে বলেছিলাম যে হিন্দি শোধরানোর তুলনায় ইংরেজি শেখা অনেকসহজ এবং আমি সঠিক ইংরেজি জানা বা না জানা নিয়ে কোনও প্রকার হীন্যমনতায় ভুগি না। আমার লক্ষ্য হল দেশের ভাষার জন্যই যেন দেশবাসী আমায় গ্রহণ করে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৯৫ শতাংশ শিশুই, যারা মাতৃভাষায় লেখাপড়া করে, তাদের প্রতিভার বিকাশ বা ব্যবহার হয় না সুযোগের অভাবে। যেদিন দেশ ও সমাজের প্রতি স্তরে এই সমস্ত শিশুদের প্রতিভা স্বীকৃতি পাবে, সেদিন ভারত সূর্যের মতো ঝলমল করবে।