নয়া দিল্লি: এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে, তবুও মণিপুরে (Manipur) নিভছে না অশান্তির আগুন। সংরক্ষণ নিয়ে মণিপুরের মেতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তা একমাস পার করেও থামেনি। বরং বেড়েই চলেছে অশান্তি। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়েই আজ, শনিবার সর্বদলীয় বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আজ সর্বদলীয় বৈঠকে বসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ, শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ এই বৈঠক হতে চলেছে। নয়া দিল্লিতে সংসদ ভবনে এই বৈঠক বসবে। সমস্ত দলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পওয়ার এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁর বদলে এনসিপির সাধারণ সম্পাদক নরেন্দ্র ভর্মা ও মণিপুরে এনসিপি প্রধান সোরান ইবোয়াইমা সিং বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্য়দিকে, তৃণমূলের তরফে ডেরেক ও’ব্রায়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ডাকা এই বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেসের তরফে উপস্থিত থাকবেন ইবোবি সিং, বিআরএসের বিনোদ কুমার, আরজেডির মনোজ ঝা, শিবসেনা (উবিটি)-র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী, শিবসেনার একনাথ শিন্ডে। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্য়ানন্দ রাই। প্রত্যেক দলের প্রতিনিধিকে ১০ মিনিট করে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, “নজিরবিহীন হিংসায় মণিপুরের সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। দেশের মননে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে”। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “বিগত ৫০ দিন ধরে অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চুপ রয়েছেন। এমন সময়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হচ্ছে, যখন প্রধানমন্ত্রী দেশেই নেই! স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
প্রসঙ্গত, বিগত ৩ মে থেকে অশান্তির আগুন জ্বলছে মণিপুরে। মেতেই-দের তফশিলি জনজাতির অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েই কুকি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। অল ট্রাইবালস স্টুডেন্ট ইউনিয়নের আয়োজিত মিছিল ঘিরে চুড়াচন্দপুর থেকে যে অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল, তা গোটা রাজ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য় সরকারের তরফে কার্ফু জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। সেনা ও অসম রাইফেলসের বাহিনীও পাঠানো হয় মণিপুরে। বর্তমানে মণিপুরের কয়েকটি জেলা থেকে কার্ফু প্রত্যাহার করা হলেও, জারি রয়েছে ইন্টারনেট ব্যান। আগামী ২৫ জুন অবধি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে। নিয়মিত কেন্দ্রীয় সেনা ও র্যাফ টহল দিচ্ছে।