লখনউ: ছেলে-বউমা-নাতি নিয়ে ভরা সংসার ছিল বৃদ্ধার। কিন্তু দিন ১৫ আগেই স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাপের বাড়ি চলে যায় স্ত্রী ও পুত্র। এরপর থেকেই উধাও হয়ে যান বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলে। দিন দুই-তিন কেটে গেলেও তাদের কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। এরপর মঙ্গলবার হঠাৎ ঘর থেকে পচা গন্ধ নাকে এল প্রতিবেশীদের। সঙ্গে সঙ্গেই তারা দরজা ভাঙেন। ভিতরে ঢুকে দেখতে পান ঘরের এক কোণে পড়ে রয়েছে বৃ্দ্ধার দেহ। আরেক কোণে চুপটি করে বসে রয়েছে তাঁর ছেলে। মা মারা গিয়েছে, এ কথা বুঝতে পেরেও দিনের পর দিন ধরে ঘরের ভিতরেই ফেলে রেখেছিল দেহ। কারণ হিসাবে ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর কাছে মায়ের শেষকৃত্য করার জন্য টাকা নেই। সেই কারণে ঘরেই ফেলে রেখেছিল দেহ। মঙ্গলবার পুলিশ গিয়ে ওই বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার গুলরিহা এলাকা থেকে ফোন আসে। জানানো হয়, একটি বাড়ি থেকে এক বৃদ্ধার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে জানা যায়, বছর ৪৫-র এক ব্যক্তি বিগত চারদিন ধরে তাঁর মায়ের মৃতদেহ আগলে বসেছিল। কেন শেষকৃত্য করেনি, তা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, শেষকৃত্য করার জন্য তাঁর কাছে টাকা নেই। সেই কারণে বাড়িতেই রেখে দিয়েছিল দেহ। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি মদ্যপ। মানসিকভাবে তিনি স্থিতিশীলও নন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার বাড়ি থেকে পচা দুর্গন্ধ আসতেই পুলিশে ফোন করেন। দরজা ভেঙে দেখা যায়, ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। মৃত মহিলার নাম শান্তি দেবী (৮২)। তিনি সরকারি স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা। তাঁর একমাত্র ছেলে নিখিল মিশ্র। তিনি বিবাহিত এবং একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু মদ্যপ ও মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় দিন ১৫ আগেই তাঁর স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে মা-ছেলে একাই থাকতেন।
পুলিশি জেরায় ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, পাঁচদিন আগে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। কিন্তু শেষকৃত্য করার টাকা না থাকায়, তিনি দেহ বাড়িতেই ফেলে রেখেছিলেন। কীভাবে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলতে পারেননি ওই ব্যক্তি। বর্তমানে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।