নয়া দিল্লি: চাকরি খোয়াতে চলেছেন আইএএস ট্রেনি পূজা খেড়কর। এবার তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল ইউপিএসসি। জানা গিয়েছে, ইউপিএসসি-র তরফে তাঁর প্রার্থী পদ বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। অভিযোগ, প্রতিবন্ধকতার ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে আইএএসের চাকরি বাগিয়ে নিয়েছিলেন পূজা। ট্রেনি পদে থাকাকালীনই তাঁর দাবিদাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে জেলাশাসক অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরই পূজার কীর্তি সামনে আসে।
ইউপিএসসি-র তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, পূজা মনোরমা দিলীপ খেড়করের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্ত করা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার পদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
ইউপিএসসি জানিয়েছে, তদন্তে জানা গিয়েছে, পূজা খেড়কর তাঁর নিজের নাম, মা-বাবার নাম, ছবি, সই, ইমেইল আইডি, মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা বদল করে নির্ধারিত সীমার থেকেও বেশিবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছে। শারীরিক অক্ষমতার ভুয়ো সার্টিফিকেট দেখিয়ে আইএস পদে চাকরি পায় পূজা খেড়কর।
মিথ্যা পরিচয় ও ভুয়ো সার্টিফিকেট পেশ করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগেই ইউপিএসসি তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিভিল সার্ভিস এগজামিনেশনে তাঁর প্রার্থী পদ বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই পূজা খেড়করকে পুণে পুলিশ তলব করেছিল বয়ান রেকর্ড করার জন্য। ট্রেনি আইএএস পূজা খেড়কর পুণের জেলাশাসক সুহাস দিওয়াসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। এই জেলাশাসকই পূজার বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছিলেন।
২০২২ সালের ব্যাচের আইএএস ট্রেনি পূজা খেড়কর। তিনি প্রথমে পুণের সহকারি জেলাশাসক ছিলেন। এরপর ওয়াসিম জেলায় তাঁর বদলি হয়। কাজে যোগ দেওয়ার আগেই পূজা লাল বাতির গাড়ি, আলাদা কেবিনের দাবি জানান। তাঁর দাবি-দাওয়া এবং ঔদ্ধত্যেই বিরক্ত হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের কাছে অভিযোগ জানান জেলাশাসক।
ঘটনার যত জল গড়ায়, ততই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসতে শুরু করে পূজা খেড়কর ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে। জানা যায়, ১৭ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক পূজা আংশিক দৃষ্টিক্ষমতাহীনের যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন, তা ভুয়ো। অভিযোগ ওঠার পর তাঁর অক্ষমতা পরীক্ষার জন্য এইমসে তলব করা হলেও, মানসিক অসুস্থতা ও ক্লস্ট্রোফোবিয়ার বাহানা দিয়ে পূজা এমআরআই করাতে অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য তিনি অন্য ক্লিনিক থেকে এমআরআই রিপোর্ট জমা দেন। সেটিও ভুয়ো বলেই দাবি।
ইউপিএসসি-তে ‘ওবিসি নন-ক্রিমি লেয়ার ক্যাটেগরি’তে আবেদন করেছিলেন পূজা। পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম হলে, এই ক্যাটেগরিতে আবেদন করা যায়। কিন্তু পূজার বাবাও প্রাক্তন আইএএস অফিসার। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। তাঁর হলফনামায় উল্লেখ ছিল, বার্ষিক আয় ৪৯ লক্ষ টাকা। তবে পূজা নন-ক্রিমি লেয়ার কীভাবে আবেদন করলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।