নয়া দিল্লি: কিছুতেই দমছে না লাল ফৌজ। ফের একবার প্যাংগং হ্রদের আশেপাশে নির্মাণকাজ শুরু করে দিয়েছে চিনের সেনাবাহিনী (Chinese Army)। সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রেই (Satellite Image) চিনের এই কর্মকাণ্ড ধরা পড়েছে। জানা গিয়েছে, লাদাখের কাছেই অবস্থিত আকসাই অঞ্চলে এই নির্মাণকাজ শুরু করেছে চিন। মার্কিন সেনার এক জেনারেল এই দাবি করলেন। তিনি জানিয়েছেন, বেশ কিছু পরিকাঠামো যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
মার্কিন কম্যান্ডিং জেনারেল চার্লস এ ফ্লিন জানান, সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে লাদাখের কাছে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে চিনা সেনাবাহিনী ফের একবার পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। চিনের এই গতিবিধিকে তিনি উদ্বেগজনক ও অস্থিতিশীল আচরণ বলেই অ্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় চিনের এই গতিবিধি উদ্বেগজনক। পশ্চিমী থিয়েটার কম্যান্ড অঞ্চলে চিন যে পরিকাঠামো গঠন করছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।”
চিনের এই গতিবিধি লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অঞ্চলের স্থিতাবস্থাকে বিঘ্নিত করবে বলেই উল্লেখ করেন তিনি। চিনের এই দুর্নীতিপরায়ণ আচরণের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কাজ করার কথাও বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, আগামী অক্টোবর মাসেই হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে ৯ থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় ভারত ও আমেরিকার সেনাবাহিনীর মিলিত প্রশিক্ষণ চলার কথা রয়েছে। নির্দিষ্ট কোথায় এই প্রশিক্ষণ চলবে সে বিষয়ে কিছু জানানো না হলেও, ভারতে প্রশিক্ষণের পর একইভাবে আলাস্কার চরম শীতল আবহাওয়াতেও দুই দেশের সেনা প্রশিক্ষণ হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে আধুনিক প্রযুক্তি, বায়ুসেনার নানা বিমান ব্য়বহার করা হবে। দুই দেশের মধ্যে বিশেষ তথ্য আদান-প্রদানও করা হবে।
এদিকে, ২০২০ সাল থেকেই ভারত ও প্রতিবেশী দেশ চিনের মধ্যে সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে ঘিরে। ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ঠিক পাশে নির্মাণকাজ শুরু করেছিল লাল ফৌজ। সেই সময়ে ভারতের সেনাবাহিনী আটকাতে গেলে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় দুই দেশের মধ্যে। ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হন। চিনেরও বিপুল সংখ্যক সেনার মৃত্যু হয়েছিল। এরপর দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনায় দুই দেশের সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থান থেকে কিছুটা পিছিয়ে আসে। কিন্তু এখনও অবধি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি।
উপগ্রহ চিত্র অনুযায়ী, প্যাংগং হ্রদের পাশেই উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে সংযোগকারী সেতু তৈরি করছে চিনের সেনাবাহিনী। এরফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় খুব সহজেই সেনা, অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করতে পারবে লাল ফৌজ। চিনের এই কার্যকলাপ দেখার পর ভারতীয় সেনাও ভারত-চিন সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে।