ভারতের উপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক! আমেরিকার পৌষমাস নাকি সর্বনাশ করে ছাড়লেন ট্রাম্প?
US Tariff on India: জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, স্বাভাবিকভাবেই সেই পণ্যের চাহিদা কমবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকায় ভারতীয় পণ্য দামি হয়ে গেলে রফতানি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

নয়া দিল্লি: আমদানি-রফতানির বাণিজ্যে পড়তে চলেছে বিরাট প্রভাব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎই ভারতের উপরে শুল্ক দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর তাতেই মাথায় হাত বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের। ভারতের বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই শুল্কের প্রভাব পড়তে চলেছে, যেমন চামড়া, কেমিক্যাল, গ্রহরত্ন, গহনা, জামাকাপড়, জুতো এবং চিংড়ি।
দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর থেকেই শুল্ক বসানোর কথা বলে যাচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময় তিনি বারংবার ভারতকে ভাল বন্ধু বলে যেমন উল্লেখ করেছিলেন, তেমনই এটাও বলেছিলেন যে ভারতের চড়া শুল্কের কারণে তাদের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য করতে সমস্যা হয়। এবার তিনি প্রথম ধাপে ২৫ শতাংশ, এবং তারপরই রাতারাতি সেই শুল্ক ৫০ শতাংশ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এতে ভারত থেকে রফতানি করা পণ্যের উপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসবে। স্বাভাবিকভাবেই জিনিসপত্রের দামও বাড়বে।
আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যের একটা বড় বাজার রয়েছে। লেদার বা চামড়া থেকে শুরু করে গ্রহরত্ন, জামাকাপড়, জুতো- অনেক কিছুই বিপুল পরিমাণে ভারত থেকে আমেরিকায় রফতানি করা হয়। ট্রাম্পের পরিকল্পনা, এভাবে অতিরিক্ত শুল্ক বসালে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। একে তো তাঁর দেশের মানুষ ভারতীয় পণ্যের বদলে সস্তায় আমেরিকান পণ্য কিনবে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত শুল্কের ভয় দেখিয়ে ভারতকে বাধ্য করা যাবে তাদের শুল্ক কমাতে।
জিনিসপত্রের দাম বাড়লে, স্বাভাবিকভাবেই সেই পণ্যের চাহিদা কমবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকায় ভারতীয় পণ্য দামি হয়ে গেলে রফতানি ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
যে যে পণ্যের দাম বাড়বে আমেরিকায়, তা হল-
- অর্গানিক কেমিক্যাল (অতিরিক্ত ৫৪ শতাংশ শুল্ক বসবে)
- কার্পেট (৫২.৯ শতাংশ শুল্ক)
- উলের পোশাক (৬৩.৯ শতাংশ শুল্ক)
- বোনা পোশাক (৬০.৩ শতাংশ শুল্ক)
- হিরে, সোনা ও অন্যান্য গহনা (৫২.১ শতাংশ শুল্ক)
- মেশিন ও অ্যাপ্লায়েন্স (৫১.৩ শতাংশ শুল্ক)
- ফার্নিচার, বিছানা, গদি (৫২.৩ শতাংশ শুল্ক)
প্রসঙ্গত, আজ ৭ অগস্ট থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক জারি হচ্ছে ভারতীয় পণ্যে। আগামী ২৭ অগস্ট থেকে তা বেড়ে ৫০ শতাংশ হয়ে যাবে। এমনিতে আমেরিকায় কোনও পণ্য পাঠাতে যে রফতানি শুল্ক বসানো হয়, তার উপরেই এই অতিরিক্ত শুল্ক চাপবে।
চিংড়ি, জামাকাপড়, লেদারজাত পণ্যে যেখানে প্রতি বছর ১ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য় হত, তা বড়সড় ধাক্কা লাগতে পারে। প্রতিযোগীতার বাজারে এই শুল্ক যেমন ভারতের ক্ষতি করবে, তেমনই আবার আমেরিকার বাজারেও ক্ষতি হবে।

