নয়া দিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বৃহত্তম দল হয়েছে বিজেপি, তবে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে জোট হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে এনডিএ-র হাতে। তারাই সরকার গঠন করতে চলেছে। তবে, বিরোধীরা একে নরেন্দ্র মোদীর পরাজয় বলে দাবি করছে। নৈতিক দায় নিয়ে তাঁর ইস্তফা দাবি করছে। বিজেপির খারাপ ফলের পিছনে মহারাষ্ট্র-সহ একাধিক রাজ্যের খারাপ ফল দায়ী হলেও, মূলত উত্তরপ্রদেশের ফলই গেরুয়া শিবিরকে ডুবিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় রাজনীতির পুরোনো প্রবাদ, দিল্লির তখতের রাস্তা উত্তর প্রদেশের মধ্য দিয়ে যায়। এবার উত্তর প্রদেশের ফল, বিজেপিকে সরকার গড়া থেকে না আটকাতে পারলেও, নরেন্দ্র মোদীকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে। উত্তর প্রদেশে বিজেপির খারাপ ফলের পিছনে অনেক কারণ উঠে আসছে। এরই মধ্যে অন্তর্ঘাতের বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন যোগী রাজ্যের এক সাংসদ!
উত্তর প্রদেশ থেকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ হরনাথ সিং যাদবের অভিযোগ, রাজ্যে বিজেপির কয়েকজন বড় নেতা অন্তর্ঘাত করেছেন। বিজেপি প্রার্থীদেরই হারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর তাতেই রাম মন্দির উদ্বোধনের পরও, উত্তর প্রদেশে এই অবস্থা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। হরনাথ সিং যাদব বলেছেন, “আমি উত্তর প্রদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারছি না। আমি দুঃখ পেয়েছি। উত্তর প্রদেশে আমাদের দলের অন্তত ৭৫টি আসন পাওয়া উচিত ছিল। আমরা কোথায় পিছিয়ে গেলাম? দলীয় নেতৃত্বকে এই বিষয়ে ভাবতে হবে।”
#WATCH | BJP MP Harnath Singh Yadav says, “I have not been able to dissociate myself from the current political situation which has developed in Uttar Pradesh. I feel hurt because our party deserved at least 75 seats in UP, where did we lag? Our party leadership needs to think… pic.twitter.com/jEs8Qd8Mh1
— ANI (@ANI) June 6, 2024
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাম থেকে শহরে প্রতিটি জায়গায় প্রতিধ্বনিত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম। তিনি দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, উত্তর প্রদেশে অনেক কাজ করেছেন। জনকল্যাণে অনেক পরিকল্পনা নিয়ে এসেছেন। এতদসত্ত্বেও কোথায় ভুল হয়েছে, তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। আমরা কম আসন পেলেও প্রধানমন্ত্রীর উপর মানুষের আস্থা রয়েছে এবং এনডিএ সরকার গঠিত হবে। প্রতিটি হেরে যাওয়া আসনে হারের কারণ কী ছিল, কেন আমরা হেরেছি, তা নিয়ে দলের নেতৃত্বের আলোচনা করা দরকার। যদি কোনও বিধায়ক বা বড় মাপের নেতা বিশ্বাসঘাতকতা করে থাকেন, তাহলে তিনি দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”
প্রসঙ্গত, নির্বাচন চলাকালীন জামিনে জেল থেকে বেরিয়েই এক বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল। কেজরীবাল দাবি করেছিলেন, তৃতীয় মেয়াদে মদী ক্ষমতায় ফিরলে দুই মাসের মধ্যে নাকি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে যোগী আদিত্যনাথকে। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে ইন্ডিয়া জোট এক রাজনৈতিক আখ্যান তৈরি করেছিল। আখ্যানটি ছিল এই রকম, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারকে নিষ্কন্টক রাখার জন্য এর আগে মধ্য প্রদেশ এবং হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল যথাক্রমে শিবরাজ সিং চৌহান এবং মনোহরলাল খট্টরকে। একইভাবে যোগীকেও সরিয়ে দেওয়া হতেই পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর প্রদেশে মোদীর ভক্তদের পাশাপাশি, আলাদাভাবে যোগীরও একটা ভক্তকূল আছে। যারা মোদীর আগেও যোগীকে রাখেন। তাঁদের একটা অংশ এই আখ্যান বিশ্বাস করে, নির্বাচনে অন্তর্ঘাত করে থাকতে পারেন, বা সেভাবে কাজ না করে থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।